কালীগঞ্জটপ লিড

ঝিনাইদহে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে ওরা ১৫ জন

#শাহরিয়ার আলম সোহাগ, ঝিনাইদহের চোখঃ

কেউ ভিক্ষা করে। কারও বাবা নেই, আবার কারো মা নেই। এদের বসবাস রেল স্টেশনের বস্তিতে। দু’বেলা খেতেই তাদের যেতে হয় ভিক্ষা করতে। লেখাপড়া করা তো অসম্ভবই। অভিভাবকহারা এসব শিশুরা অন্য পরিবারের শিশুদের থেকে একটু অন্যভাবেই মানুষ হয়। সারাদিন কোথায় থাকে খোঁজ থাকে না এদের, রাতে বাড়ি ফিরে হাতে ভিক্ষা করা টাকা দিলেই খুশি ওদের অভিবাবকেরা। মানুষের মতো মানুষ হওয়ার নেই কোন স্বপ্ন।

এসব শিশুদের স্বপ্ন দেখাতে মাঠে নেমেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১৫ কিশোর। রোদ্দুর নামে সংগঠন বানিয়ে সমাজের এসব শিশুদের শিক্ষা প্রদান করছে তারা। এসব কিশোরেরা বিভিন্ন স্কুল কলেজে পড়াশোনা করে। নিজেদের হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে তারা এসব শিশুদের শিক্ষাদানের পিছনে খরচ করে।

সরেজমিনে দেখা যায়, একটি বড় কড়ই গাছে সাদা বোর্ড টাঙানো। খোলা আকাশের নিচে ২৫ জন ছোট শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদান দিচ্ছে ৩ জন যুবক। মাটিতে প্লাস্টিকের বস্তার ছালা বানিয়ে শিশুদের বসানো হয়েছে। অনেকের শরীরে কাপড়ও নেই। কেউ গণিত শেখাচ্ছে, কেউ আবার ইংরেজি। স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়ে গেলেও অনেক শিশু স্কুলেও ভর্তি হয়নি। প্রতিদিন দেড় ঘন্টা করে সপ্তাহে ৬ দিন এসব শিশুদের পাঠদান করনো হয়। এর একদিন ওদের সাথে বিভিন্ন খেলাধুলা করা হয়।

সাহেদ নামের এক শিশু জানায়, তার বাবা নেই। দুই ভাই আর মাকে নিয়ে মোবারকগঞ্জ স্টেশনের বস্তিতে থাকে। সারাদিন ভিক্ষা করে। স্কুলেও ভর্তি হয়নি সে। প্রতিদিন বিকেলে সে এখানে পড়তে আসে। ওর খুব ভালো লাগে।

রোদ্দুর নামের এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ নাহিদ হাসান বলেন, আমরা যে ১৫ জন আছি সবাই ছাত্র। বেশিরভাগই শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। নিজেদের হাত খরচের টাকা বা টিফিনে খাওয়ার টাকা বাঁচিয়ে এসব শিশুদের শিক্ষাদানের পিছনে খরচ করি। প্রতিদিন ৩ জন দেড় ঘন্টা করে এসব শিশুদের পাঠদান করায়। মাঝে মাঝে খাবারও দেয়।

তিনি আরো জানান, অধিকাংশ শিশু ভিক্ষা করে। অস্ত্র-মাদক যেন ওদেরকে গ্রাস করতে না পারে। ওরা যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে এইজন্য আমরা ওদের শিক্ষা দিয়ে আলোকিত করার চেষ্টা করছি। আমরা ছাত্র, সমাজের বিত্তবানদের প্রতি তিনি এসকল শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button