দেখা-অদেখা

ঈদ-বর্ষা যাপনে ঘুরে আসুন পাহাড়-বন-সমুদ্রে

#ঝিনাইদহের চোখঃ

সমুদ্র দেখতে কেমন লাগে? অথবা পাহাড়ের চুড়োয় চুল সিথি করে দেওয়া হাওয়া কেমন লাগে? বনে-জংগলে রাত কাটানো হয়েছে কখনো? আপনারা তো আবার এটাকে ক্যাম্পিং বলেন। করেছেন কখনো, ক্যাম্পিং? হ্রদের পানিতে ডিঙি টানতে কেমন হবে বলুন তো? কী, ভাবছেন ভারত ভ্রমণের লোভ দেখাচ্ছি? না। একদমই তা নয়। আমি আসলে চট্টগ্রাম আসার দাওয়াত দিচ্ছি।

এক ট্যুরে পাহাড়, হ্রদ, বন ও সমুদ্র সব দেখা সম্ভব একমাত্র চট্টগ্রামেই। আর বর্ষায় চট্টগ্রাম নিজেকে করে তুলে আরও সবুজ, আরও আকর্ষণীয়।

ভ্রমণটা শুরু করতে পারেন শহর থেকে। ফয়’স লেক, ওয়ার সিমেট্রি, বাটালি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, লালদীঘি মসজিদ তাও আবার একদিনেই! এছাড়াও যেতে পারেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, কর্ণফুলী নদীর মোহোনার নেভাল একাডেমি রোড অথবা শহর থেকে ঘণ্টা দু’য়েকের দূরুত্বে ঘুরে আসতে পারেন কাপ্তাই লেক, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক অথবা মীরসরাই।

নগরীর প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচ মিনিটের দূরুত্বে কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি। এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন আপনি। জায়গাটাও ঘুরে দেখার মতো। তার পর চলে যেতে পারেন পতেঙ্গা। সূর্যাস্ত কিংবা মাঝরাতে পূর্ণিমা দেখা; বার্থডে থেকে বার্বিকিউ পার্টি, সব প্ল্যানেই ঠিকঠাক জায়গা করে নিচ্ছে নতুন রূপে সেজে ওঠা পতেঙ্গা।

আনোয়ারার পার্কি সৈকতে ৯০ এর দশকের কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের আমেজ পাবেন। যেতেও খুব বেশি একটা সময় লাগে না। বিকেলটা কাটিয়ে দেওয়ার জন্য সৈকতটা মন্দ না। যেতে পারেন উত্তর কাট্টলি বিচে। পাশেই পাবেন ম্যানগ্রোভ বন। তবে পতেঙ্গা, কাট্টলি কিংবা পার্কি সব সৈকতেই পানি কিন্তু কক্সবাজারের তুলনায় বেশ ঘোলা। অনেক ক্ষেত্রে নোংরাও মনে হতে পারে। তাই এ পানিতে গা ভেজাতে না চাইলে চলে যেতে পারেন নগরীর পাহাড়তলীর ফয়’স লেক সি ওয়ার্ল্ডে। এটিই দেশের সবচেয়ে বড় ওয়াটার থিম পার্ক। এখানে উপভোগ করতে পারেন বোট রাইডিং।

ট্র্যাকিং করা আর ঝর্ণা দেখার যদি ইচ্ছা থাকে তবে পুরো দিন হাতে নিয়ে ঘুরে আসুন সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই। বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে কমলদহ, সহস্রধারা, খৈয়াছড়া, নাপিত্তাছড়াসহ রয়েছে আরও ক’টি ছোট-বড় ঝরনা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছেই এসব ঝরনায় কয়েক দিন বৃষ্টি পড়লেই বেশ পানি থাকে। এখানে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়া আপনাকে ট্র্যাকিংয়ের আমন্ত্রণ জানাবে। সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক থেকে হেঁটে যেতে পারেন সেখানে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে একটি শিবমন্দির। ট্র্যাকিং করতে পারেন পন্থিশীলা-সীতাকুণ্ড-চট্টগ্রাম এ পথে অথবা ঝরঝরি ট্রেইলে।সবুজ, পাহাড় বা ঝর্ণা কী নেই চট্টগ্রামে! ছবি: বাংলানিউজসীতাকুণ্ডের গুয়াখালী সমুদ্রসৈকতের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? ঘুরে আসতে পারেন ওখান থেকেও। সীতাকুণ্ড এলাকাতেই পাবেন কুমারীকুণ্ড নামে একটি ছোট উষ্ণ প্রস্রবণের। এখানে পাবেন সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝরনা। মীরসরাইতে রয়েছে বাওয়াছড়া লেক। এছাড়া এখানে পাবেন মহামায়া লেক। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ।

অন্য একদিন সময় করে যেতে পারেন কাপ্তাই অথবা ফটিকছড়ির দিকে। কাপ্তাই লেকে কায়াকিং এখন অনেকটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফটিকছড়িতে রয়েছে হাজারি খিল অভয়ারণ্য, তাঁবুতে রাত কাটানোর জন্য জায়গাটা এখন বেশ জনপ্রিয়।

এ ঈদের ছুটিতে চলে আসুন চট্টগ্রাম শহরে। নিরাশ হবেন না, এটুকু নিশ্চয়তা আপনাকে দিয়ে দিতে পারি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button