#মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহের চোখঃ
নিজের সম্ভ্রম ও জীবন বাঁচাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় পর্নগ্রাফি আইনে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
মামলার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। লোক দেখানোর জন্য পুলিশ গ্রামে গেলেও আসামীকে গ্রেফতার করছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ধলরাহচন্দ্র গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা ইজাহার আলী মন্ডলের নাতনি রাবেয়া আক্তার।
বুধবার সকালে শৈলকুপা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রাবেয়া আক্তার লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে আরো বলেন, অতিকষ্টে একই গ্রামের ইয়াকুব মন্ডলের ছেলে ইনছান কবিরের সাথে তার বাবা বিয়ে দিয়েছিলেন। তার স্বামী ইনছান কবির গত দেড় বছর আগে বিদেশে পাড়ি দেয়। ইনছান কবির বিদেশে পাড়ি দেওয়ার পর থেকে রাবেয়ার বাবার অস্বচ্ছল পরিবারের সাথে সম্পর্ক না রাখার জন্য তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাঁপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে ইনছান কবির ও তার পরিবারের লোকজন রাবেয়াকে বাবার বাড়িতে চলে যেতে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এই সুযোগে রাবেয়ার ভাশুর আব্দুর রশিদের ছেলে ইউনুস তাকে মারধর করে। ইনছান কবির পরিবারের পক্ষ নিলে গত, ২২ মার্চ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। নিরুপায় হয়ে দরিদ্র বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেই রাবেয়া। শ্বশুর বাড়ী থেকে চিরতরে বিতাড়িত করতে তার স্বামীর যোগসাজসে রাবেয়ার ভাসুরের ছেলে ইউনুস আলী ২৪ এপ্রিল কোন এক মহিলার নগ্নবক্ষের ছবি রাবেয়ার মুখের সাথে কম্পিউটারাইজড করে এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিলি করে ও পোস্টারিং করে। বিষয়টি তার পরিবার ইউনুস আলীর অবিভাবকদের জানিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি, বরং তাকে আরও অসম্মানিত করে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দেয়।
অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে রাবেয়া নিজেই বাদি হয়ে গত ৯ মে শৈলকুপা থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। মামলা নং- ১১/১৭০, তাং ০৯-০৫-২০১৯ইং। মামলায় তার ভাসুরের ছেলে ইউনুস আলীকে প্রধান আসামী করা হয়।
এরই জের ধরে রাবেয়াকে ও তার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধামকি দিতে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ও জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। শুধু তাই নই, আসামীর পরিবারের হুমকিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ভ্যানচালক রবিউল ইসলামও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ইউনুস আলীর বাবা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হওয়ায় অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে তাদের বাড়িঘর ছাড়া করতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন।
এমনকি আসামীকে আড়াল করতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও গুটিকয়েক দালালচক্র নানাবিধ পায়তাড়া চালাচ্ছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলা করলেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশি জোর তৎপরতা নেই। আসামী বেপরোয়া প্রকৃতির বখাটে ও লম্পট সে এর আগে অত্র এলাকায় আরো ৩টি মেয়েকে উত্যক্ত করতো।
তাদেরও অশালীন ছবি বানিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করেছিল। যা নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে মোটা অংকের টাকা দিয়ে রফাদফা করেছে বলে এলাকাবাসী জানেন। ন্যায় বিচারের আশায় অসহায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।