ঝিনাইদহের প্রতিবন্ধীর হুইল চেয়ারটিও প্রতিবন্ধী
#ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের জলুলী গ্রামের প্রতিবন্ধী বিল্টু (৩৫) । হাটতে না পারা বিল্টুর একমাত্র বাহন হুইল চেয়ার। আর সেই হুইল চেয়ারটিও এখন প্রতিবন্ধী। চাকায় হাওয়া নেই, হাত প্যাডেলের চেইন স্পকটেক ভাঙ্গা, নেই ব্রেক। তার পরও সেই হুইল চেয়ারে চড়ে চলাচল করেন প্রতিবন্ধী বিল্টু।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নাটিমা মান্দারতলা সড়কে দেখা যায় রাস্তার পাশ দিয়ে হাত দিয়ে চাঁকা ঘুরিয়ে কোন রকমে চলছে বিল্টুর হুইল চেয়ারটি।
কথা হয় প্রতিবন্ধী বিল্টু সাথে, সে জানায় যাদবপুর ইউনিয়নের জলুলী দাখিল মাদরাসা পাড়ার শফিকুল ইসলামে ছেলে সে। বাবা পরের জমিতে দিন মুজুরের কাজ করেন। মুজুরের কাজ করে যা পাই তা দিয়েই ৫ জনের সংসার টা কোন রকমের চলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। জন্ম থেকেই সে প্রতিবন্ধী দু-পায়েই কোন বল না থাকায় তার চলার একমাত্র বাহন এই হুইল চেয়ারটি।
তিনি আরো জানান, হামাগুড়ি দিয়ে আগে চলতে হতো তা দেখে এলাকাবাসী তাকে এটি কিনে দিয়েছিলো। এটা চালিয়ে বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুড়ে সাহায্য তুলতেন। এখন এটার অবস্থা বেশি ভালো না । এটা চলতে চায় না, হাতের পেটেলটিও করা যায় না।
স্থানীয়রা বলেন, অনেক দিন ধরেই প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে হাত দিয়ে হুইল চেয়ারের চাঁকা ঘুড়িয়ে রাস্তায় চলতে দেখি। রোদ-গরমের মধ্যে দিয়ে ৫ মিনিটের রাস্তা তার এক ঘন্টা লেগে যায়। হাত দিয়ে চাঁকা ঘুড়িয়েই বা কতদূর যাওয়া যায়। গাড়িটির চাকা,রিং-বেয়া রিং সবই নষ্ট হয়ে গেছে। গাড়িটি ভালো থাকলে হয়তো তার এতো সময় লাগতো না।
যাদবপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় দেন-দরবার আর বিভিন্ন অফিসে ঘুরেও ছেলেটির জন্য একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে পারিনি। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ছেলেটিকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়া হয়েছে। আজ সেটিও চলাচলের মত আর নেই।
যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শাহীদুল ইসলাম জানান, ছেলেটা আসলেই খুবই অসহাই। সে জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী বিল্টুই চেয়ার পাওয়ার উপযুক্ত ছেলে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বতী শীল জানান, আমি মহেশপুরে যোগদানের পর যে সব প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েরা এসেছে আমি কাউকেই খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি। আর প্রতিবন্ধী বিল্টু তো আমার অফিসে আসেইনি। আসলে আমি অবশ্যয় তার জন্য একটা চেয়ারের ব্যবস্থা করবো।