জানা-অজানাটপ লিডমাঠে-ময়দানে

ইডেনে ঝিনাইদহের ‌নূর বক্স যেন হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা

ঝিনাইদহের চোখঃ

তিনি নিজের মনে গান গেয়ে চলেছেন। তাঁকে ঘিরে জটলা। এমন পোশাক, এমন দাড়ি ক্রিকেটীয় আবহে অন্যরকম।

কেউ বলছেন ‘‌বাউলবাবা’‌, কেউ ‘‌ফকিরবাবা’‌। ইডেন জুড়ে মুশফিকুর রহিম, বিরাট কোহলিদের মতোই তাঁকে ঘিরেও মাতামাতি।

নূর বক্স। বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার পোড়াহাটি। হাতে ঢাউস একতারা। মনের সুখে বাজিয়ে যাচ্ছেন। বয়স ৮১। গানের গলাও ভাল।

ক্রিকেটপাগল। সুযোগ পেলেই ক্রিকেট মাঠে হাজির। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপে হাজির ছিলেন। ভারতেও এসেছেন বেশ কয়েকবার। ম্যাচের প্রথম দিন একতারা নিয়ে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। পুলিশ দেয়নি। একতারা জমা রেখেই মাঠে ঢুকতে হয়েছিল। শনিবার ময়দানের গাছতলায় বসে গাইছিলেন ‘‌আমায় ডুবাইলি রে, আমায় ভাসাইলি রে.‌.‌.‌’‌। চারপাশে ভিড়। মনে হচ্ছিল, এই ‘বাউলবাবা’‌ই যেন হ্যামলিনের সেই বাঁশিওয়ালা। বললেন, ‘ভারতে আগেও বেশ কয়েকবার ম্যাচ দেখে গেছি। ২০১৫ বিশ্বকাপেও এসেছিলাম। সেবার বেঙ্গালুরুতে দারুণ লড়েও ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবারও হারের মুখে।’ তঁার একতারার করুণ সুরটা যেন বাংলাদেশের দিক থেকে ম্যাচের আবহসঙ্গীত। পরিস্থিতি হালকা করে ৮১ বছরের বৃদ্ধ বললেন, ‘শুধু করুণ সুরটাই শুনলেন? আমি কিন্তু অনেক ভাল পল্লিগীতিও গেয়েছি।’‌

প্রাক্তন সেনানী নূর বক্স পেনশন ও কয়েকজন শুভানুধ্যায়ীর দেওয়া টাকায় ঘোরেন দেশ–বিদেশে। ক্রিকেটারদের কাছ থেকেও হোটেল এবং যাতায়াতের খরচ পেয়ে থাকেন। যেমন ভারত সফরের খরচের দায়িত্ব অনেকটাই নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ম্যাচের টিকিটও জোগাড় করে দিয়েছেন।

বলছিলেন, ‘‌কলকাতা তো আমাদেরই দেশ। মনেই হচ্ছে না বিদেশে এসেছি।’‌ সৌরভ গাঙ্গুলির প্রতি অন্যরকম আবেগ রয়েছে ৮১ বছরের ক্রিকেটপ্রেমীর। বললেন, ‘‌সৌরভকে তো খেলার সময় থেকে চিনি। আমাদের দেশ যেদিন প্রথম টেস্ট খেলেছিল, মাঠে ছিলাম। ক্যাপ্টেন হিসেবে সৌরভের প্রথম ম্যাচ। বাংলাদেশ যে গোলাপি বলে টেস্ট খেলছে, সেটা সৌরভের জন্যই। ও একদিন আইসিসি–র প্রেসিডেন্ট হবে।’‌

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button