ঝিনাইদহে ব্যতিক্রমী ডোঙা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
খাইরুল ইসলাম নিরব, ঝিনাইদহের চোখঃ
ছলাৎ ছলাৎ শব্দে মৃতপ্রায় নবগঙ্গার বুক চিড়ে বয়ে চলে তাল গাছের তৈরী ডোঙ্গা নৌকা। চলে একে অপরকে পিছনে ফেলে সামনের দিকে ছুটে চলা। আর এতে উৎসাহ যোগায় নদীপাড়ে থাকা দর্শনার্থী।
এমনি এক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ঝিনাইদহ শহরের নবগঙ্গা নদীতে। ধোপাঘাটা-গোবিন্দপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির আয়োজনে শুক্রবার সকালে এ ডোঙা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় নদীর তীরে দাড়িয়ে নানা বয়সে বিপুল দর্শক উপভোগ করে এই বাইচ প্রতিযোগিতা। শহরের গোবিন্দপুর এলাকা থেকে বাইচ শুরু হয়ে ২ কিলোমিটার দুরের ধোপাঘাটা এলাকায় শেষ হয়। এতে অংশ নেয় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২২ টি নৌকা।
শহরের ভূটিয়ারগাতী এলাকা থেকে এ প্রতিযোগিতা দেখতে আসা রুবেল হোসেন বলেন, আমাদের নবগঙ্গা নদী মৃত প্রায়। এখানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা করা সম্ভব নয়। তাইতো এলাকার মানুষ ডোঙা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এ প্রতিযোগিতা খুবই উপভোগ্য। না দেখলে বোঝা যাবে না বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কতটা সমৃদ্ধশীল।
একই এলাকার জিল্লুর রহমান বলেন, দখল আর দুষণে নবগঙ্গা তার যৌবন হারিয়েছে। সরকার যদি এই দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী খনন করে তাহলে এ ধরনের আয়োজন আরো ভালো ভাবে করা সম্ভব।
বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা আব্দুর সাত্তার বলেন, আগে এই নদীতে বাইচ প্রতিযোগিতা হতো। এখন তা অনেকটা হারিয়ে গেছে। অনেকদিন পর আবারো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে খুবই খূশি আমি।
এ ব্যাপারে আয়োজক ধোপাঘাটা-গোবিন্দপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, আবহমান গ্রাম বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে আর স্বল্প আয়ের মৎস্যজীবিদের একটু আনন্দ দিতে এই আয়োজন।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ প্রতিযোগিতায় সবাইকে হারিয়ে প্রথম হয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর সাত্তার। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় মোবাইল, লাইট ও ছাতা।