ঝিনাইদহে শীতের আগমনী বার্তায় ব্যস্ত গাছিরা
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
দিনে কিছুটা গরম হলেও সন্ধা হলেই শীত, তার মানে শীতের আগমন বার্তা চলে এসেছে।
https://www.youtube.com/watch?v=5oKX_V40QIs
সকালেও শিশির ভেজার পথ। যা শীতের আগমনের বার্তা জানান দিচ্ছে। এরই মধ্যে ঝিনাইদহের গাছিরা আগাম খেজুর গাছ তুলতে শুরু করেছে।
যারা খেজুর গাছ থেকে বিশেষ ভাবে রস সংগ্রহ করতে পারদর্শি তাদেরকে গাছি বলা হয়। আগাম রস পাবার আশায় শেষ কিছু গাছি গাছের পরিচর্যা শুরু করেছে।
শীতের মওসুম শুরু হতে না হতেই খেজুরের রস আহরনের জন্য গাছিরা খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে ডোঙ্গা বেঁধে নিপুন হাতে গাছ চাছাছোলা করছে। এরই মধ্যে কয়েকজন গাছে নলি মারতে শুরু করেছে। কয়েকদিন পরই গাছিদের খেজুর গাছ কাটার ধুম পড়ে যাবে। শীতের মোসুম আসলে দেশের দক্ষিন-পশ্টিচমাঞ্চলে সর্বত্র খেজুরগাছ কাটার ধুম পড়ে যাই। খেজুরের গুড় তৈরি ব্যস্ত হয়ে পড়ে গাছিরা। তাদের মুখে ফুটে ওঠে হাসি।
শীতে মওসুম মানেই খেজুর গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে পুরো মহল্লা। শীতের সকালে খেজুর রসের তৃপ্তি-ই আলাদা আর খেজুর রসের ক্ষীর পায়েসের মজাই না-ই বা বলা হল। প্রতিদিন গ্রামের কোন না কোন বাড়িতে খেজুর রসের খবারের আয়োজন চলে। খেজুরের শুধু রসই নয়, পাটালি, নলেন গুড় ছাড়া জমেই ওঠেনা।
এক সময় ঝিনাইদহের কোটচাাঁদপুর, খালিমপুর, কালীগজ্ঞ পাবনা এবং যশোরের গুড় ছিল বিখ্যাত। এসকল এলাকার খেজুর রসের গুড় নদীয়াসহ কোলকাতায় চাহিদাই ছিল ব্যপক। সে সময় ব্যবসায়িরা এলাকা থেকে গুড় সংগ্রহ করে গরু -ঘোড়ার গাড়িতে করে মাঝদিয়া বাজারের উদ্দেশ্যে রওনরা দিত।
এক সময়ের ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তের পথে, কারন এক কেজি গুড় তৈরি রতে খরচ ৪০-৫০ টাকা আর বিক্রি করতে হয় ৫৫-৬০ টাকা বড় জোর ৭০টাকার বেশি নয়। যে কারনে চাষিরা গুড় বানাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। এছাড়া আগের মত খেজুর গাছও নেই।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুরের সাব্দার হোসেন বলেন, আগাম গাছ তুললে আগেই গুড়, পাটালি তৈরি করা যায়। তাই দামও চাহিদা ভালো থাকে। তবে এখন আর আগের মত গাছি পাওয়া যাচ্ছেনা। গ্রামাঞ্চলে হাতে গনা কয়েকজন গাছি, যারা খেজুর গাছ কাটতে পারে। নতুন করে ছেলেরা আর খেজুর গাছ কাটতে চাইনা।