ঝিনাইদহের চোখঃ
‘সেচের অভাবে বোরোখেত নষ্ট হচ্ছে। আবার এসেছো সেচের টাকা নিতে। এটা তো অন্যায়।’ এ কথা বলতেই চায়ের কেটলির গরম পানি ছুড়ে মারা হলো নিখিলের মুখে।
ঝলসে যাওয়া মুখ আর ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের হরদেবপুরের নিখিল দাস।
এমন অমানবিক কাজের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের প্রভাবশালী সুকুমার দাসের ছেলে বাপ্পী দাসের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী নিখিল দাস জানান, তিনি গরিব মানুষ। বসতভিটার দুই শতক জমিই একমাত্র সম্বল। দিনে পরের বরজে মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। সন্ধ্যার পর গ্রামের মধ্যেই নিজে একটা চায়ের দোকান চালান। কিছু টাকা জমিয়ে গ্রামের সাগর দাস আর জাফর মোল্যার ১০ কাঠা জমি ইজারা নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছেন। চার হাজার টাকা চুক্তিতে জমিতে সেচের দায়িত্ব দেন সুকুমার দাসকে। কিন্ত কিছুদিন ধরে সেচের অভাবে ধান নষ্ট হচ্ছে। বারবার বিষয়টি জানানোর পরও কাজ হয়নি। উল্টো সেচের টাকা নিতে এসে গালমন্দ করে সুকুমার ও তার ছেলে বাপ্পী।
নিখিল দাস বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় আমার দোকানে এসে টাকার জন্য গালমন্দ করে বাপ্পী। সেচের অভাবে ধান নষ্ট হচ্ছে সেটা না দেখে টাকার জন্য গালমন্দ করার প্রতিবাদ করায় সে মারার জন্য তেড়ে আসে। তখন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চায়ের কেটলির ফুটন্ত পানি আমার মুখে ছুড়ে মারে। এতে আমার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
নিখিলের স্ত্রী মুক্তি রানী দাস বলেন, আমার স্বামী সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি এখন হাসপাতালে শুয়ে আছেন। ব্যথায় কাতরাচ্ছে। চিকিৎসার জন্য টাকাও নেই।
জামাল ইউপি চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মণ্ডল জানান, কারো সঙ্গে কথা কাটাকাটি হতেই পারে। তাই বলে ফুটন্ত গরম পানি ছুড়ে মারা চরম অপরাধ।
কালীগঞ্জ থানা ওসি মুহা. মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, এখনো কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।