” লকডাউনে পার্লার মালিকদের করণীয় কি?”–সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষক এ.কে.এস অনিমিথ
ঝিনাইদহের চোখঃ
বিশ্বব্যাপি শিরোনাম এখন করোনা। মানুষের প্রতিপক্ষও করোনা। করোনার কারনে লকডাউনে থাকা বিউটিশিয়ান ও পার্লার মালিকদের অসহায়ত্বের অন্ত নেই, কিন্তু করণীয় কি?
এ প্রসঙ্গে আমাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সৌন্দর্য বিষয়ক গবেষক ও লেখক মোঃ এ.কে.এস অনিমিথ
তিনি সকল পার্লার মালিক ও বিউটিশিয়ানদের প্রতি ১২ টি অতি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন, তা হলো-
(১) লোনের প্রয়োজন হলে, প্রয়োজনীয় সকল কাগজ সম্পর্কে আগেই বলেছি, সেগুলো সংগ্রহে রাখতে হবে । তা না হলে লোন হবেনা অযথা হয়রানি হতে হবে, এবং আপনার সকল কাগজ সংগ্রহের আগেই ফান্ডও শেষ হয়ে যাবে। সর্বশেষ মানসিক ভাবে হতাশাগ্রস্হ হতে হবে।
(২) খাবারের সমস্যা হলে সরকারের দেয়া নম্বরে ফোন দিয়ে খাবার নিন,আপনি সরকারকে ভ্যাট-ট্যাক্স-বিল দেন তাহলে সরকারের কাছ থেকে কেন সাহায্য নিবেন না প্রয়োজন হলে? সংকোচে ক্ষুধার্ত থাকবেন না।
(৩) এাণ বা দান শব্দটা তুলে যদি উপহার শব্দ চয়ন হতো তবে মধ্যবিত্তের জন্য নেয়াটা লজ্জা বোধের হতোনা।সরকারের পাশাপাশি যে সকল সংগঠন,অ্যাসোসিয়েশন বা ব্যক্তি উপহার দিচ্ছেন আপনাদের প্রয়োজনে সেগুলো নিন।
(৪) নির্লজ্জ সত্য হলো এ লকডাউনের সময়েও অনেকে গোপনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে নিজের ওষুধ, ব্যক্তিগত দেনা, বাসাভাড়া, শিশুর খাবার, অক্ষম-অসুস্হ পিতামাতা,প্রতিবন্ধি ভাইবোনের ওষুধ খরচের জন্য। কোন কারফিউ, কোন রোগ এদের বন্দি করতে পারবেনা এক মৃত্যু ছাড়া। এ সময়ে যারা কাজ করছেন তারা কাজের ক্ষেএে সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে কাজ করুন।
(৫) আপনার ঘরে খাবার নেই, আপনি উপহার নিন, যদি পর্যাপ্ত থাকে অন্যকে খাবার উপহার দিন। আপনার কোন প্রতিবেশী ও সহযোদ্ধা যেন ক্ষুধার্থ না থাকে।
(৬) নিজের ও পরিবারের স্বাস্হ্য নিয়ে সচেতন হোন এবং করোনা প্রতিরোধক সকল নির্দেশনা মেনে চলুন। আপনার কর্মিবাহিনী ও অধিনস্তদের খোজ নিন তারা যেন ক্ষুধার্ত না থাকে। খাবার না দিতে পারলেও নিয়মিত খোজ নিন, মনোবল দিন তাদেরকে।
(৭) অন্যের প্রতি কুৎসা,পরচর্চা,সমালোচনা,ঘৃণা,চরিএের দোষ,কাজে ভুল ধরা প্রকাশ না করে ভালোবাসা দিন, সম্মান দিন, ঠিক একই জিনিস ফেরত পাবেন।
(৮) পেশাগত ঈর্ষা থাকবেই কিন্তু ব্যাক্তিকেন্দ্রিক হিংসা,ক্ষতি করার মনোভাব,উপহাস করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন মাঠে কিন্তু সবাই ব্যাটিং পায় শুধু আগে আর পরে।
(৯) সপ্তাহে অন্তত ১ দিন পার্লার খুলে পরিষ্কার করে ধুয়ে, মুছে রাখুন।আর সিকিউরিটি ঠিক আছে কিনা লক্ষ্য রাখুন। দামি কিছু থাকলে বাসায় নিয়ে রাখুন।
(১০)বড় বড় পার্লার মালিকদের কেউ যদি মনে করেন যে করোনায় ছোট ছোট পার্লার বন্ধ হলেই আপনাদের ভাল ব্যবসা হবে ভবিষৎ এ, তাদের উদ্দ্যেশে বলতে চাই ” প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে, সে ঘর পুড়ে নিজের ঘরও কিন্তু পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে।” তাই অন্যের অমঙ্গল মনে কামনা না করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন।
(১১) কোন ধরনের সহযোগিতা যদি নাও পান, যদি ব্যবসা বন্ধও হয়ে যায়, তবুও মনোবল রাখবেন,কখনো ভেঙে পড়বেননা। যখন শুরু করেছিলেন তখন কে সহযোগিতা করেছে? তখন যখন পেরেছেন আবারো পারবেন ইনশআল্লাহ। এখন আপনার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা আছে, বহু মানুষের ভালোবাসা আছে। পৃথিবীর কেউ বিশ্বাস করুক না করুক আমি অনিমিথ বিশ্বাস করি আপনি আবার পারবেন ঘুরে দাড়াতে। সুতরাং নিজের প্রতি নিজেই যদি বিশ্বাস না রাখেন,তবে আপনাকে কে এবং কেন বিশ্বাস করবে?
(১২) সর্বশেষ বলতে চাই মানুষিক ভাবে শক্তিশালি হোন, আল্লাহ পাক বলেন” যে আমার উপর আস্হা রাখে,আমিই তার জন্য যথেষ্ট”। সৃষ্টিকর্তার উপর আস্হা রাখুন,ইবাদত করুন,বইপড়ুন,মজার সিনেমা দেখুন,রুপচর্চা ও ব্যায়াম করুন,গাছ পরিচর্যা করুন,পরিবারের সাথে প্রতিটা সময় উপভোগ করুন। জীবন অনেক সুন্দর যদি সুন্দর করে সব ভাবতে পারেন।