জানা-অজানা

করোনা টেস্টে শিগগিরই অনলাইনে সিরিয়াল দিতে হবে

ঝিনাইদহের চোখঃ

ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেতার ভবনে) করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ টেস্ট ল্যাবে প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। ল্যাবটিতে ২টি মেশিনে দিনে আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ রোগীর নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা আছে। অথচ প্রতিদিন সেখানে জড়ো হয় ৫শ’ থেকে ৬শ’ রোগী। তাদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার গাইডলাইন দেয়ার জন্য ৩০ থেকে ৩৫ জন অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। বেশি সংখ্যক রোগী নিয়ে ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন। তবে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে অনলাইনে সিরিয়াল দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতার ভবনে করোনাভাইরাসে সন্দেভাজনদের ছাড়াও জ্বর সর্দি ও কাশির রোগীর চিকিৎসা গাইডলাইন দেয়া হয়। গত ২২ মার্চ থেকে সেখানে ৫ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রোগী দেখেন। সেখানে ডাক্তার জ্বর, সর্দি ও কাশির রোগী দেখেন। চিকিৎসক রোগী দেখার পর যাকে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য (এ্যাডভাইস) প্রেসক্রিপশন দেন, তাকে করোনা ল্যাবে নেয়া হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ টিম নমুনা কালেকশন করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব অর্থায়নে জরুরিভিত্তিতে একটি পিসিআর মেশিন কিনে সেখানে ল্যাবের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। আরও একটি মেশিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়েছে। মাত্র ৩০ টাকা দিয়ে রোগী দেখা ও পরীক্ষা করা হয়। শুক্রবার ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রোগী দেখা ও নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল থেকে বেতার ভবনে করোনা রোগীর টেস্ট করা শুরু হয়েছে। সেখানে রোগীদের প্রচণ্ড চাপের কারণে অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার ৪শ’ রোগীর নমুনা কালেকশন করা হয়েছে। আর জ্বর ও সর্দির রোগী দেখা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার। এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন রোগীর করোনা পরীক্ষা করার জন্য মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এছাড়াও সাংবাদিক, ডাক্তার, নার্স ও পুলিশ সদস্যরা সেখানে গেলে তাদের করোনা টেস্ট করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীরা পার্শ্ববর্তী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেস্ট করতে না গিয়ে সবাই এখন শাহবাগ বেতার ভবনে ছুটছে, এ কারণে প্রতিদিন বহু রোগী পরীক্ষা করতে পারছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর থেকে মেশিন দেয়া হলে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। সাধারণত প্রতিজন করোনাভাইরাস রোগীর টেস্ট করতে ৪ হাজার টাকারও বেশি খরচ পড়ে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতার ভবনে করোনা টেস্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। রোগীরা পার্শ্ববর্তী অন্য টেস্টে কেন্দ্রে যেতে পারেন। তাহলে চাপ কিছুটা কমবে। এখন ঝামেলা ঠেকাতে অনলাইনে সিরিয়াল দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে এ সিরিয়াল চালু করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে যারা অনলাইনে সিরিয়াল দিয়ে আসবে তাদের নমুনা কালেকশন করে টেস্ট করা হবে। এরপরও একান্ত গরিব রোগী যারা সিরিয়াল দিতে পারবে না তাদের কথাও বিবেচনা করা হবে। যাতে কেউ চিকিৎসা ও পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়।

প্রসঙ্গত, ঢাকায় মোট ১২টি কেন্দ্রে করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতার ভবন কেন্দ্র ছাড়া করোনা টেস্টের অন্য কেন্দ্রগুলো হলো, ঢাকায় আমর্ড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, আইসিডিডিআরবি, আইদেশী, এনপিএমএল-আইপিএইচ, আইইডিসিআর, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টার, মুগদা মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও এভারকেয়ার হাসপাতাল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button