চুম্বন কেড়ে নেয়া করোনা—শার্মী ভৌমিক
ঝিনাইদহের চোখঃ
আজকাল প্রতিদিন প্রায় দুপুরবেলায় সকাল হয় আমাদের,
ঘুম থেকে জেগেই অভিযান চলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার!
স্নান আর খাওয়াদাওয়ার পর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে পশ্চিম আকাশে,
জীবন থেকে হারিয়ে যেতে দেখি আরো কিছু অমূল্য সময়ের!
টেলিভিশনের পর্দায় যা দেখি সবই এখন একঘেয়ে মনে হয়, মেয়েদের নিয়ে কিছুক্ষণ পড়ার টেবিলে বসে তাদের প্রিয়তম পিতা।
আদা-লেবু চায়ে চুমুক দিয়ে কোন আনন্দ পায় না আমার মিতা!
গৃহপরিচারিকাহীন আমি কর্মে- ক্লান্তিতে দীর্ঘ সময় অন্তঃপুরেই পড়ে থাকি!
রান্নায়ও আজকাল আগ্রহ হয় না, আনন্দহীন নীরস কাটে দিবসরজনী!
পরাধীনতার শেকল পায়ে বাঁধা নেই, যেন মনকে বেঁধে দিয়েছে কেউ!
ঘর হতে বেরুলেই করোনা গলা টিপে ধরবে আমাদের-
এই ভেবে বাইরে যেতে বড্ড ভয় হয়!
একটু কেশে দিলেই করোনার হুঙ্কারে পিলেটা চমকে যায়!
এ কী দুঃসহ যন্ত্রণা, এ কী মানসিক চাপের মাঝে বেঁচে আছি আমরা!
এতোসব দুঃশ্চিতার মাঝেও দু’চোখে ভেসে ওঠে অনাহারী মলিন মুখগুলো!
ওদের শীর্ণ চোখের চাহনিতে আমি আহত- ক্ষতবিক্ষত হই!
কে তুলে দেবে ওদের মুখে ভাত দুটো!
কেউ কী খবর রেখেছে ওদের কিছু?
জানি না! আমি আর ভাবতে পারি না!
নিজের অপারগতার কথা ভেবে নিজেকেই দিই ধিক্কার শুধু।
মন খারাপের এই অবেলায় সময় যেন আর কাটে না!
সীমাহীন অস্থিরতা নিয়ে আবার ঘুমুতে যাই আমি,
বিছানায় গা এলিয়ে ভাবি হাজারো এলোমেলো ভাবনা!
বহুদিন হয়ে গেলো ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোই না!
কতদিন ওকে চুম্বনে চুম্বনে ভরিয়ে দিই না!
বহুদিন হয় ওকে আমি তেমন করে আর ভালোবাসতে পারি না!
ওকে ভালো রাখতে চাই,
ওকে সুরক্ষিত দেখতে চাই বলেই আজকাল ওর খুব কাছেও যাই না…!
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)