অন্যান্য

দু:খিনি খাতুনের দুঃখের শেষ কোথায়…?

শেখ সবুজ আহমেদ, ঝিনাইদহের চোখঃ

মানুষের বিপদের সময় পাশে থেকে সহযোগিতা করাই মানুষের ধর্ম হওয়া উচিত। একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে যদি একটি প্রাণ বাঁচে তাতে সমস্যা কোথায় কারণ আমরা সবাই তো মানুষ। কিন্তু আমাদের সমাজে এখনো কিছু বিত্তশালীরা আছে যে তারা তাদের আঁখের গোছানো নিয়েই ব্যস্ত, পাশের প্রতিবেশী কি খাচ্ছে বা না খাচ্ছে কেমন আছে বেঁচে আছে না মারা গেছে তা দেখার সময় তাদের নেই ।কারণ তারা তো এখন রঙিন চশমা পড়ে আছে, কারণ পৃথিবীটা তো তাদের কাছে রঙিন প্রতিটা দিন তাশের আড্ডায় রঙিন পানিতে ও সুন্দরী রমণীর নাচে’র আসরে কেঁটে যাচ্ছে তাদের প্রতিটা পহর ভালো কাঁটছে তাদের জীবন কিন্তু তারা কি কখনো ভেবেছেন পাশের বাড়ির অনেক প্রতিবেশী ক্ষুধার জ্বালা সহ্য না করতে পেরে নিজের মাথার চুল পর্যন্ত বিক্রি করে ক্ষুধার্ত শিশুর মুখে অন্ন যোটাচ্ছে, কোন সন্তান আবার অসুস্থ মাকে চিকিৎসা না করতে পেরে ক্ষোভে দুঃখে আত্ম চিৎকার করছে। এবং আবার অনেক মা সন্তানের রোজগার কম হাওয়াই অসুস্থ হয়েও খিদার জালাই তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছে, তেমনি একটি অসহায় মায়ের কথা বলছি কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের গনেশ পুর গ্রামের দু়ঃখনি খাতুনের কথা, ষাটের ঊর্ধ্বে বয়স কঠিন রোগে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অনেক আগে, ওঠার সাধ্য নেই তার এবং কি দু’বেলা ঠিকমত খেতেও পারে না সে কারণ তার স্বামী অনেক আগেই মারা গেছে ছেলের রোজগার কম হয় ছেলে ও ছেলের বউ বাচ্চা নিয়ে মোটামুটি চলছে । এদিকে অসুস্থ মা’র ভালো চিকিৎসা করাবেন ভালো খাবার খাওয়াবে সে সাধ্য তার ছেলের নেই। নিজের চোখের সামনেই মাকে তিলে তিলে শেষ হতে দেখছে সে, ভিটেমাটি বিক্রি করেও যে তার মাকে চিকিৎসা করাবে সে সামর্থ্যও নেই। খোকসার গড়াই নদীর বেড়িবাঁধের পাশে এক টুকরো জমিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই মোটামুটি হয়েছে কিন্তু তা বিক্রি করার সাধ্য নেই। এমন করেই তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে দু়ঃখনি খাতুন।

তার ছেলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, অনেক আগেই মাকে ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু তিনি যা বলে সে সাধ্য আমাদের ছিল না তাই আমরা কিছু করতে পারিনি। এ যে আমাদের দেশে চলছে মহামারী করোনাভাইরাস সরকার কত খাদ্যসামগ্রী দিল কিন্তু আমরা কিছুই পাইনি আমার মাকে একটি বয়স্ক বা বিধবার কার্ড পর্যন্ত কেউ দেয়নি কারণ আমরা যে মেম্বার-চেয়ারম্যান কে টাকা দিতে পারব না এ কারণে আমাদেরকে কিছুই দেওয়া হয় না।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দু়ঃখনি খাতুনের ঘরটি দুপাশে চাটাইয়ের বেড়া ও বাকিটা খোলা ওপরে কাগজ দিয়ে ঢাকা, যত ঝড়-ঝাপটা ,আমফান, তুফান যাই হোক না কেন এর মধ্যেই থাকতে হয় দু়ঃখনি খাতুনকে।

এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা বলেন, দু়ঃখনি খাতুনকে ভালো ডাক্তারের কাছে নেওয়া খুবই জরুরি কারণ তিনি খুবই অসুস্থ আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বলতে চাই আপনারা দু়ঃখনি খাতুনকে সাহায্য করুন কারণ সে খুবই অসহায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button