জাহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহের চোখঃ
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় কাবিখা’র ২য় কিস্তির বিশেষ প্রকল্পে খাল ও রাস্তা চাচা-ছোলা করে ১১০ মেঃ টন গম হজম করা হয়েছে।
প্রাপ্ত সূত্রে প্রকাশ, এ উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ১১০ মেঃ টন গম বরাদ্দ আসে। এ প্রকল্পে ৩টি খাল ও ২টি রাস্তা সংস্কারের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়। সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাগুলির কোন রকমে ঘাস চেচে হালকা মাটি ছিটিয়ে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। খাল ৩টির কোন রকম পাড় চেচে সীমিত কিছু মাটি খনন করে শেষ করা হয়েছে। প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে উকড়ির বিল হতে গোকুলনগর পর্যন্ত সাড়ে ৯শ মিটার খাল খনন। এ প্রকল্পে বরাদ্দ ৩২.৫ মেঃ টন গম। এই প্রকল্পে আংশিক কাজ হয়েছে।
প্রকল্পের সভাপতি স্বরুপপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি খাতা কলমে সভাপতি হলেও বাস্তবে একটি সিন্ডিকেট এই কাজ করছে। কাজ সঠিকভাবে না হওয়ায় তিনি নিজেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
এসবিকে ইউনিয়নের কাকিলাদাড়ি মাঠে ৮৬০ মিটার খাল খনন প্রকল্পে ২০.৫ মেঃ টন গম বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিপলু মেম্বার বলেন, তিনি কাজটি সঠিকভাবে করেছে কিন্তু সরেজমিনে খোজ নিতে গেলে এলাকাবাসী জানায়, খালটির কাজ কোন রকম চাচা-ছোলা করে শেষ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি ২০ভাগ কাজও হয়নি।
যাদবপুর ইউনিয়নের জলুলী গ্রামে খাল খননের জন্য ২০ মেঃ টন গম বরাদ্দ হয়। প্রকল্পের সভাপতি যাদবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি। প্রকল্পের দৈর্ঘ্য কত মিটার, কি পরিমান কাজ হয়েছে কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, ২টা ডিওতে স্বাক্ষর করেছি মাত্র।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের ডাকাতিয়া মাঠের রাস্তা সংস্কার প্রকল্পে ২২ মেঃ গম বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্পের সভাপতি শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ জানান, তিনি যথাযথভাবে কাজ শেষ করেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাস্তা চাচা-ছোলা ছাড়া আর কিছুই করা হয়নি।
আজমপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মনির খানের বাড়ি হতে মাঠের রাস্তা সংস্কারের জন্য ১৫ মেঃ টন গম বরাদ্দ করা হয়। ঐ রাস্তারও একই অবস্থা। এলাকাবাসী জানায় কোন রকমে রাস্তায় মাটি ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের সভাপতি আজিজুর রহমান মন্টু বলেন, প্রকল্পের ডিজাইন অনুযায়ী কাজ শেষ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের প্রকৌশলী বেনজামিন বলেন, ৫টি প্রকল্পের মধ্যে ৪টি শেষ হয়েছে এবং স্বরুপপুর ইউনিয়নের একটি আংশিক(৩০০মিটার) কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থ বিডি করে ব্যাংকে রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাশ্বতী শীল বলেন, প্রকল্পগুলি তার পক্ষে পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে পরে জানাতে পারবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শফিকুল আজম খাঁন চঞ্চল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার দূর্ণীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়া তিনি এসব প্রকল্প যথাযথভাবে তদারকি করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।