মহেশপুরে ভূয়া ডাক্তার ও ক্লিনিককে জরিমানা
জাহিদুল ইসলাম, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভূয়া ডাক্তার ও নার্স দিয়ে চলছে অনুমোদহীন ক্লিনিকের রমরমা বাণিজ্য। এসব ক্লিনিকে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে ছোটখাটো থেকে শুরু করে এ্যাপেনডিকস, সিজার ডেলিভারীসহ নানা ধরনের অপারেশ করা হচ্ছে। ভুল চিকিৎসার কারণে প্রসূতী মৃত্যু ,নবজাতকের মৃত্যু সহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটলেও টাকার বিনিময়ে দফারফা করে পূনরায় বহাল তবিয়তে এসব অপকর্ম চালাচ্ছে।
গত ২৭শে জুলাই উপজেলার পুড়াপাড়া বাজারে সজীব মেডিকেলের মালিক আলাউদ্দিন নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালত।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ উপজেলায় প্রায় ২১টি ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার রয়েছে। দেখা গেছে নি¤œমানের যন্ত্রপাতি এবং অদক্ষ লোক দ্বারা পরিচালনা করা হচ্ছে এসব ক্লিনিক। এদের অবৈধ কর্মকান্ড পত্রপত্রিকার শিরোনামে আসার পর এরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুনরায় তাদের কর্মকান্ড চালাচ্ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রানালয়ের অনুমোদন ছাড়াই চলছে এসব ক্লিনিকগুলো। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এরা ভূল রিপোর্ট দিয়ে রোগীদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হলেও এতে স্থায়ী কোন প্রতিকার হচ্ছেনা।
প্রাপ্ত সূত্রে জানা যায়, ডাক্তারের ভুল অপারেশন এবং ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এসব ক্লিনিকে গত এক বছরের ব্যবধানে ২২জন নবজাতক ও ১৮জন প্রসূতি মায়ের করুণ মৃত্যু হয়েছে। আর এসব ক্লিনিকে যেসব ডাক্তার রোগী দেখেন তাদের অনেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে কর্মরত রযেছে। এতে একদিকে যেমন উপজেলায় সরকারি স্বাস্থ্য সেবার ব্যাঘাত ঘটছে তেমনি ডাক্তাররা বেশী নজর দিচ্ছেন প্রাইভেট ক্লিনিকে। যদিও নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক পরিচালনা করতে গেলে আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর লাইসেন্স নেয়ার কথা থাকলেও এ নিয়মের কোন তোয়াক্কা করছে না এসব ক্লিনিকের পরিচালকরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর একটি সূত্র জানায়, প্রাইভেট ক্লিনিক বা ডায়গনস্টিক সেন্টার চালু করতে গেলে পরিবেশগত ছাড়পত্র, নারকোটিকস এর লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হলেও এসবের তোয়াক্কা না করেই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এদের আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয়া না হলে করোনাভাইরাসের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুকির আশংকা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাক্তার সেলিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, তদন্ত স্বাপেক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।