হরিণাকুন্ডুতে ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসুতি মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
এম.মাহফুজুর রহমান, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু হাসপাতাল মোড়ের ভাই ভাই ক্লিনিকে রোজিনা খাতুন (২০) নামে প্রসুতি সিজারের পর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম রোববার বিকালে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ঝিনাইদহের ৩জন ডাক্তার এবং হরিণাকুন্ডু হাসপাতালের বড় বাবুকে এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাদেরকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে মানহীন ক্লিনিকে অহরহ প্রসুতি ও শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যবিভাগে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। মৃত গৃহবধু হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের শিলনের স্ত্রী।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, রোজিনা খাতুন জ্বর নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের শামিমা ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন। জটিলতা থাকায় ডাঃ শামিমা অপারেশনের ঝুকি না নিয়ে রোগী ফিরিয়ে দেন। এরপর রোজিনা ভর্তি হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। স্বজনরা বৃহস্পতিবার রাতে হরিণাকুন্ডু হাসপাতাল মোড়ের ভাই ভাই ক্লিনিকে ভর্তি করেন। শুক্রবার সকালে ওই ক্লিনিকে ভর্তির পর ডাঃ জামিনুুর রশিদ ও ডাঃ আহসান হাবিব রোজিনাকে সিজার করেন। সিজারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে পেট ফুলে গিয়ে শনিবার ভোরে রোজিনার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী শিলন মিয়া।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডুসহ বিভিন্ন উপজেলা ও হাটে বাজারে গজিয়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোতে সেবার কোন মান নেই।
এলাকাবাসি জানায়, হরিণাকুন্ডুর ভাই ভাইসহ ৬টি ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন নেই। নেই সাইনবোর্ড। নেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ডাক্তার, ডিপ্লোমা নার্স, প্যাথলজি টেকনিশিয়ান। নেই চিকিৎসার নুন্যতম কোন পরিবেশ। ক্লিনিকগুলোতে সর্বক্ষন কোন চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স নেই।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম জানান, আমরা মাতৃ মৃত্যু কোন ভাবেই সহ্য করবো না। হরিণাকুন্ডুর ভাই ভাই ক্লিনিকে প্রসুতি মৃত্যুর ঘটনায় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তাদেরকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রসুতি মৃত্যুর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি বলেন, আগামী ২৩ আগষ্ট পর্যন্ত এ সব ক্লিনিকের শেষ সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তারা শর্ত পুরণ করতে না পারলে মানহীন এসব ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেব।