ঝিনাইদহের চোখ-
৬ মাস চিকিৎসা শেষে অপারেশন করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে একপর্যায়ে অপারেশন না করে হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হয়েছে।
হাফিজুর রহমান শৈলকুপা উপজেলার বিষ্ণুদিয়া গ্রামের দিয়ানত আলীর ছেলে। ভুক্তভোগি হাফিজুর রহমানের পিতা মোঃ দিয়ানত আলী শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করার পর ঝিনাইদহ ফিরোজ ডায়াগষ্টিক সেন্টারে ডা. মোঃ মনিরুল ইসলামের তত্বাবধানে দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চলতে থাকে। ডাক্তার বলে যদি প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন করাতে হয় তাহলে ৩৬ হাজার টাকা ব্যায় হবে। সরকারি হাসপাতালে করলে ২৬ হাজার টাকা লাগবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের অর্থ সংকট থাকায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে অপারেশনের জন্য আমার ছেলেকে ১০ সেপ্টেম্বর ভর্তি করা হয়। এ কারণে ওই ডাক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি দেয় হাফিজুর রহমানের অপারেশন কোথায় কিভাবে হয় সেটি আমি দেখে নেব।’ ডাক্তারের এই হুমকি দেওয়ার পর তিনি সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ককে বিষয়টি জানান।
মোঃ দিয়ানত আলী শেখ বলেন, ‘ঘটনাটি জানানোর পর তত্বাবধায়ক ওই ডাক্তারকে ডেকে অপারেশনের জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো সে অনুরোধ উপেক্ষা করে ক্ষমতা বলে আমার ছেলেকে অপারেশন না করে অন্যত্র পাঠানোর চেষ্টা করে। তখন আমি নিরুপায় হয়ে ২২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আমার ছেলেকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যায়।’
তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, সরকারি হাসপাতালে যদি মানুষ সেবা না পায় তাহলে কোথায় গিয়ে সেবা পাবে। তিনি ডাক্তারকে কসাইয়ের সাথে তুলনা করেন। পাশাপাশি একজন চিকিৎসকের এহেন নেক্কার জনক আচরণের সুবিচার দাবি করেন তিনি।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল কমিউনিটি সাপোর্ট কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান খোকা বলেন, ঝিনাইদহের ফিরোজ ডায়াগষ্টিক সেন্টারে ডা. মোঃ মনিরুল ইসলামের তত্বাবধানে হাফিজুর রহমান দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ চিকিৎসা নেয়। পরে অপারেশনের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সুপারেন্টেডেন্ট এর সাথে কথা বলে সকলের পরামর্শক্রমে সদর হাসপাতালে হাফিজুর রহমানকে চলতি মাসের ১০ সেপ্টেম্বর ভর্তি করা হয়। পরে সুপার সাহেব সর্বশেষ জানালেন ওই ডাক্তার বাইরে অপারেশন করতে চেয়েছিল। এখানে অর্থকড়ির ব্যাপার আছে।
তিনি আরও জানান, ডাঃ মোঃ মনিরুল ইসলাম সুপাররেন্টেডেন্ট সাহেবকে কথা দিয়েও তিনি আদোব রক্ষা করলো না। সর্বশেষ তিনি রেফার্ড করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কে করে এই রোগীর চিকিৎসা সেটি আমি দেখবো !’
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারী) ডাঃ মোঃ মনিরুল ইসলাম রাগান্বিত কন্ঠে বলেন, ‘হাফিজুর রহমান নামের রোগিকে আমি কোন চিকিৎসা দেয়নি। তাকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে। আমার কাছে এ রোগীর কোন চিকিৎসা নেই।’