২’শ বছরের ব্যবসাকেন্দ্র হিসাবে খ্যাত শৈলকুপায় অবশেষে শুরু হলো ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম
এম হাসান মুসা, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহ জেলার ঐতিহ্যবাহী ২’শ বছরের পুরাতন শৈলকুপা উপজেলায় অবশেষে চালু হলো ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম। গত ৮অক্টোবর থেকে জেলা পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলামের নির্দেশে এ কার্যক্রম চালু করা হয়। এর আগে জেলার আইন-শৃঙ্খলা মিটিং এ শৈলকুপার যানজট ও দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছিল। শৈলকুপার সংবাদকর্মীরাও বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা মিটিং সহ অন্যন্য সভা-সমাবেশে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শত শত বছর ধরে কুমার নদের পাশে গড়ে ওঠা শৈলকুপা উপজেলা একটি অন্যতম ব্যবসা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। লাঙ্গলবাধ, শেখপাড়া, হাটফাজিলপুর ও ভাটই বাজার এই উপজেলার পুরাতন ব্যবসাকেন্দ্র। উপজেলাটি ৪টি জেলা কুষ্টিয়া, রাজবাড়ি, মাগুরা ও ঝিনাইদহের সঙ্গে সীমানা সম্পৃক্ততা রয়েছে। ফলে অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত। এখানে রয়েছে স্থল ও নদীপথ । অপরাধপ্রবণ হিসাবেও এ উপজেলার রয়েছে নানা সমালোচনা। সহিংসতা, হানাহানি, হত্যা-আত্মহত্যা যেন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। এ উপজেলার বড় একটি অংশ নিয়ে গঠিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় । কিন্তু শৈলকুপা উপজেলা বরাবরই ছিল অবহেলিত।
অবশেষে ২০২০ সালে এসে ঘটল শৈলকুপা উপজেলা শহরের এক ইতিবাচক ও আমুল পরিবর্তন। চলতি মাসের ৮অক্টোবর থেকে উপজেলাটিতে শুরু হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রম। এখানে একজন টিআই, একজন সার্জেন্ট ও ২জন কনস্টবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরা হলেন টিআই ইসমাইল হোসেন, সার্জেন্ট কনক হালদার, কনস্টবল নুরুল ইসলাম ও কনস্টবল শয়ন মিত্র।
ট্রাফিক টিম খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপার ভাটইবাজার, শৈলকুপা-গাড়াগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের গাড়াগঞ্জ এবং শৈলকুপা উপজেলা শহরের কবিরপুর তিন রাস্তার মোড় ও চার রাস্তার মোড়ে তারা দায়িত্ব পালন করবেন। দুজন কনস্টবল কবিরপুর ও চৌরাস্তা মোড়ে পালাক্রমে ডিউটি করবেন।
নিয়োগপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইনেস্পক্টর(টিআই) ইসমাইল হোসেন জানান, প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন যেমন ইজিবাইক,সিএনজি,নসিমন,করিমন,ভটভটি,আলমসাধু,নাটাহাম্বা সহ যাদের আঞ্চলিক মহাসড়ক-মহাসড়কে চলাচলের অনুমোতি নেই সেসব চালকদেরকে সচেতন করা হচ্ছে। উপজেলা শহর থেকে যানজট দূরে কাজ শুরু হয়েছে। সার্জেন্ট কনক হালদার জানান, শনি-মঙ্গলবারে শৈলকুপার হাটের দিন ও ভাটই হাটের দিন বিশেষ দায়িত্ব পালন করবেন।
এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে ট্রাফিক কার্যক্রম।
উপজেলার চৌরাস্তা ও কবিরপুরে চিরচেনা যানজট এখন আর চোখে পড়ছে না। কমেছে দুর্ঘটনাও। পরিচ্ছন্ন রাস্তার চিত্র ও গোছানো শহরের চিত্র চোখে পড়ছে সবার। জেলার অন্যতম পেঁয়াজের হাট, কলার হাট বসে এই শৈলকুপাতে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা ট্রাক সহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে হাজির হয় এখানে। এছাড়া খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের ভাটই বাজার থেকেও যানযট নিরসনে পালাক্রমে কাজ করে যাচ্ছেন ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের সদস্যরা।
ট্রাফিক কার্যক্রমের অংশ হিসাবে গত মঙ্গলবার ভাটই বাজারে এক সচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন শৈলকুপার ট্রাফিক ইনেস্পেক্টর ইসমাইল হোসেন। সাথে ছিলেন সার্জেন্ট কনক হালদার,কনস্টেবল নুরুল ইসলাম ও শয়ন মিত্র।
কবিরপুর তিন রাস্তার মোড়ের স্থানীয় ব্যবসায়ী শুশান্ত কুমার সাহা জানান, স্থায়ী ট্রাফিক দেয়ায় কমবে যানজট ও দুর্ঘটনা । তিনি বলেন, জানজটের কারণে প্রায়শ্বই সাধারণ মানুষের মধ্যে বাকবিতন্ডা এমন কি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে আসছে।
একটি বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুজন বিশ্বাস জানান, শৈলকুপা জেলার অন্যতম একটি পুরাতন উপজেলা, জেলা শহরের সাথে যোগাযোগের আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে এখানে। প্রতিদিন বাস-ট্রাক সহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে কিন্তু ট্রাফিক কার্যক্রম না থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছিল যড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, ট্রাফিক দেয়ায় এখন থেকে বদলে যাবে দৃশ্যপট, এমনটি জানান তিনি।