জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখাশৈলকুপা

শৈলকুপার সুস্বাদু কুমড়া বড়ি ছড়িয়ে পড়ছে সমগ্র দেশে

শাহীন আক্তার পলাশ, শৈলকুপা, ঝিনাইদহের চোখ-

শীতকে বরণ করে শৈলকুপার ঘরে ঘরে চলছে কালাই আর চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরীর কাজ। বেশীর ভাগ মানুষ নিজেদের খাওয়ার জন্য তৈরী করছে বড়ি অন্যদিকে কয়েকশত পরিবার কুমড়া বড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে।

দেখা যায়, গ্রামের প্রায় বাড়ির চালে ও মাচাই শোভা পাচ্ছে বড় বড় চাল কুমড়া। যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কুমড়া বড়ি। শীতের ভোরে উপজেলা শহর ও পাড়া-মহল্লার নারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বড়ি তৈরির কাজে । কেউ কাজ করছেন ঢেঁকি দিয়ে, কেউবা সাহায্য নিচ্ছেন শিলপাটার। আবার অনেকে বৈদ্যুতিক মেশিনের মাধ্যমে। এক কথায় কুমড়া বড়ি তৈরীর ধুম পড়েছে পাড়ায় পাড়ায়।

বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত কালাইয়ের ডালের সঙ্গে চাল কুমড়ার পরিবর্তে অনেকে মূলা অথবা পেঁপে ব্যবহার করে থাকেন। শীত এলেই গ্রামাঞ্চলের লোকজন বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পাড়ার অনেক পরিবার একত্রিত হয়ে বড়ি বানাই।

শৈলকুপার রোজিনা বেগম বলেন, বড়ি ছাড়া তরকারী রান্না অপূর্ণ থেকে যায়, বড়ি প্রতিটি তরকারিতে বাড়তি স্বাদ এনে দেয়। বড়ি ভেঙে পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁজি করলে এক চমৎকার খাবার তৈরি হয়। এছাড়া, বড়ি দিয়ে রান্না করা বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলুর তরকারির স্বাদই আলাদা। প্রতিবছর শীত এলে সকাল থেকেই পাড়া-মহল্লার নারীরা আমরা বাড়ির ছাদে একত্রে দল বেঁধে ,আবার কেউ কেই মাটিতে মাদুর বিছিয়ে বড়ি তৈরীর কাজ করে থাকি।

গাড়াগঞ্জ গ্রামের কুমড়া বড়ি ব্যবসায়ী সিদ্দিক জানান, মূলত শীতের মৌসুমে কুমড়া বড়ির বাজার ধরতে আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ এই তিন মাস কুমড়া বড়ি তৈরি করা হয়। ২-৩ দিন কড়া রোদে শুকিয়ে প্রস্তত করা হয় সুস্বাদু বড়ি।

গাড়াখোলা চরের ববিতা বলেন আমরা মেশিনে বড়ি তৈরীর কাজ করি, প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কাজ করা বাবদ ৬০-৭০ টাকা করে মালিকের কাছ থেকে পাই।

বর্তমানে এ অঞ্চলের হাট বাজারে প্রতি কেজি কুমড়া বড়ি ১৩০-১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিনে নিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।

গাড়াখোলা গ্রামের ওয়াহিদ হাসান জানান, আমি ৩০ বছর যাবত এ¦ই কাজের সাথে জড়িত। আমি মেশিনে কুমড়া বড়ি তৈরী করি। ডাল ও মসলার দাম বেড়ে যাওয়ায় কুমড়া বড়ি তৈরিতে খরচ বেশি পড়ছে। ফলে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের, প্রতিদিন আমার মেশিনে ৩০০ কেজি বড়ি তৈরী হয়। তিনি বলেন, সরকারী সাহায্য পেলে আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব এই খাতকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button