কালীগঞ্জজানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখা

কালীগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা

বেলাল হুসাইন বিজয়, কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহের চোখ-
কৃষকের বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে গেছে। যার সুগন্ধে প্রাণ জুড়ায় পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফসলি জমিতে হলুদ ফুলে ছেয়ে যাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে ঝিনাদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় সরিষার ফলন গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে দ্বিগুন পাওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। কম সময়ে ও ন্বল্প পুঁজি ব্যায়ে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে ঝুকছে। মৌমাছি সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণ করে ফলন বাড়ার পাশাপাশি সরিষা চাষিদের হচ্ছে বাড়তি আয়।

উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে দেখা যায়, বিঘার পর বিঘা জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এখন মাঠে হলুদ রঙের সরিষা ক্ষেতে হলুদের হাতছানি। এখন ফুলে ফুলে ভরা।ফুটান্ত ফুল হতে মধু সংগ্রহে পরিশ্রম করে যাচ্ছে মৌমাছি। গুন গুন শব্দে হলুদ সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির আনাগোনা এবং মধু আহরণের দৃশ্য বড়ই চমৎকার।

কৃষি অফিসসূত্রে জানাগেছে, কৃষি অফিস কতৃক ৬শ জন কৃষকের কাছে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৫ টি প্রদর্শনী প্লট আছে ৩৫ জন কৃষকদের। যা সরকারী প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছিল। আর বিঘা প্রতি ৬-৭ মণ সরিষা পাবে কৃষকেরা।

কালীগঞ্জ উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের সরিষা চাষি রবিউল ইসলাম জানান,আমন ধান ঘরে তোলার পর বেশ কিছু সময় জামি ফাঁকা পড়েয় থাকে। তাই ন্বল্প সময়ে বাড়তি আয়ের চিন্তা করে প্রতি বছর ৩-৪ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে থাকেন।

কুল্ল্যাপাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, গত বছর বিঘাখানেক জমিতে সরিষা চাষ করে বেশ লাভবান হয়। কম খরচে লাভ বেশি সেকারনে এই মৌসুমে আড়ায় বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছে। এবং হলুদ সরিষা ফুলের শোভিত প্রকৃতিতে কৃষকের প্রাণ জুড়িয়ে যায়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদুল ইসলাম জানান, বারি সরিষা-১৪ ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আমন ধান ঘরে তোলার পরেই কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকার মাঠে সরিষা দানা বাধতে শুরু করেছে। এই ফসল ঘরে তোলার পর আবার ওই জমিতেই কৃষক বোরো আবাদের খরচের জোগান দেয়। সরিষা আবাদের কারণে চাষ, সার ও কীটনাশক ঔষধ বেশি দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ফলে অল্প খরচ ও কম পরিশ্রমেই সরিষার জমিতে বোরো আবাদে লাভবান হয় কৃষক।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিকদার মোঃ মোহায়মেন আক্তার জানান, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সরিষা চাষের জন্য উপযোগী। কম খরচে লাভ বেশি সেকারনে কৃষকরা সরিষা চাষে বেশ ঝুকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলাতে ১ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। অল্প সময়, স্বল্প ব্যয় আর লাভ বেশি সে কারনে উপজেলার সব ধরনের কৃষকের কাছে সরিষার চাষ বেশ জনপ্রিয়। এজন্য কৃষি বিভাগ সরিষা চাষিদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আসছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button