সম্প্রীতির বন্ধন ‘গাতা’ পদ্ধতিতে এখনো চলছে ঝিনাইদহে দিনমজুরের কাজ
ঝিনাইদহের চোখ-
অন্য কৃষকের পেঁয়াজের বীজতলায় কাজ করছেন দিনমজুররা। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। সবাই এক শ্রেনীই কৃষক। যারা প্রত্যেকেই এ বছর পেঁয়াজ আবাদ করবেন। এক কৃষকের জমির পেঁয়াজ আজ রোপন করে দিবেন। তবে বিনামুল্যে বা অর্থের বিনিময়ে নয়। আজ যে কৃষকের পেঁয়াজ তারা রোপন করছেন পরের দিন অন্যের জমিতে আজকের এই কৃষক পেঁয়াজ রোপন করে দিবেন। স্থানীয় ভাষায় যার নাম বলা ‘গাতা’। যুগ যুগ ধোরে গ্রাম বাংলার কৃষকদের মাঝে চলে আসছে এই প্রথা। যার মাধ্যমে একে অন্যকে সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। মুলত একে অন্যের সহযোগিতার মাধ্যমে কৃষি আবাদ করার জন্য গ্রামের কৃষকরা এই জোট বা ‘গাতা’ করে আসছেন।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আগুনিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলামের জমিতে পেঁয়াজ রোপন করছিলেন কৃষকেরা।
‘গাতা’র ব্যাপারে কৃষক নজরুল ইসলাম ঝিনাইদহের চোখ’কে বলেন, আমি এ বছর ২ বিগে জমিতি পিয়াজ লাগাবো। তাই গিরামের আরো যারা পিয়াজ লাগাবে তাদের ডাকিছি। ১৫ জন আমার পিয়াজ লাগাই দেচ্ছে। সামনের ১৫ দিন আমি ওগের পিয়াজ লাগাই দেব। এতে একদিনি আমার পিয়াজ লাগানো হয়ে যাবি। আর ১৫ দিনি ওদেরও লাগানো হবি।
উপজেলার উত্তর মির্জাপুর গ্রামের কৃষক রুহুল শেখ ঝিনাইদহের চোখ’কে বলেন, ধান লাগানে মেশিন হইছে। কাটা মেশিন হইছে। কিন্তু পিয়াজ লাগানো তো কোন মেশিন হইনি। ছোটকাল থেকেই দেকে আসছি পিয়াজের সুমায় আসলিই ‘গাতা’ করে পিয়াজ লাগানে। এতে আমার লাভ আবার যারা গাতা দেচ্চে তাগেরও লাব।
এ ব্যাপারে কৃষিবিদ জিএম আবদুর রউফ ঝিনাইদহের চোখ’কে বলেন, পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা বিশেষ করে ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যুগের পর যুগ এমন পদ্ধতি চলে আসছে। এতে কৃষকরা প্রত্যেকের লাভবান হচ্ছে। একজন কৃষক বাড়তি শ্রমিক ছাড়াই অন্যের সহযোগিতার মাধ্যমে একদিনের মাধ্যমে তার কাজ করতে পারছেন। এমন সহযোগিতা আর সৌহাদ্যের কারণেই বাংলাদেশ সোনার বাংলা। এটি চলতে থাকুক শতাব্দির পর শতাব্দি।