ঝিনাইদহের সড়ক মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল/৩ মাসে নিহত ৩৮
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের সড়ক মহাসড়ক যেন এক মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গত তিন মাসে ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৮ জন। এ সময় আহত হন শাতাধীক মানুষ। রাস্তায় এই মৃত্যুর মিছিল কোন ভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। বরং দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যেন রাস্তায় চলাচল মানেই এখন অনিশ্চিত যাত্রা।
রাস্তাঘাটে বৈধ অবৈধ যানবাহনের আধিক্যে চলাচল করা ঝুকিপুর্ন হয়ে উঠেছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, ওভারটেকিং ও ইজিবাই ঘুরানোর ফলে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা লেগেই আছে। বিশেষ করে মহাসড়কে অবৈধ নছিমন, করিমন, আলমসাধু, ভটভটি, লাটাহাম্বার, মাটি টানা ট্রক্টর ও ইজিবাইকের দাপটে বাস, ট্রাক, বাইসাইকেল ও মটরসাইকেল চলাচল খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এমনও নজীর রয়েছে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকাও এখন অনিরাপদ। যদিও অসর্তকতার পাশাপাশি সড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রন করতে না পারা, অদক্ষতা সর্বপরি বেপরোয়া গতির কারণে সড়কে অহরহ দৃর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
হাসপাতাল ও পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ঝিনাইদহে মারা গেছেন ৩৮ জন। এরমধ্যে কালীগঞ্জের বারোবাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এমএ ক্লাসের ৬ ছাত্রসহ মারা গেছেন ১৯ জন। এছাড়া মহেশপুরে ১ জন, শৈলকুপায় ৯ জন, হরিণাকুন্ডুতে ৩ জন, কোটাচাঁদপুরে ১ জন ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ৫ জন নিহত হয়েছেন।
ঝিনাইদহের এসব দুর্ঘটনা নিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের ঝিনাইদহ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান জানান, সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুর তালিকায় কর্মক্ষম ব্যক্তি ও তরুণদের সংখ্যাই বেশি। বাংলাদেশের সড়ক মহাসড়কে যে পরিমান জানমালের ক্ষতি হয় তা অন্য কোন উন্নত রাষ্ট্রে কল্পনা করা যায়না। তিনি বলেন, সড়ক ব্যবস্থাপনার ত্রæটি ও অসচেতনার কারণে ঝিনাইদহে প্রতিনিয়ত মৃত্যু সংখ্যা বাড়ছে। এটা রোধ করতে হলে সচেতনা ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সড়ক মহাসড়কে নিয়মিত অভিযোন জোরদার করে অবৈধ যান নিয়ন্ত্রন করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কোন চাপ বা সুপারিশ অগ্রাহ্য করতে হবে।
ঝিনাইদহ ট্রাফিক পরিদর্শক সালাহউদ্দীন জানান, সড়ক মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘনার অন্যতম কারণ হচ্ছে নছিমন, করিমন ও ইজিবাইকসহ অবৈধ যানবাহন। নছিমন করিমন তৈরী হয় কুষ্টিয়ায়। আমাদের এখন উৎপত্তিস্থল বন্ধ করতে হবে। এটা না করতে পারলে দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে না। তিনি বলেন স্পিডগান বা গতি সনাক্তকারী যন্ত্রের মাধ্যমে আমরা গড়াই ও রুপসা পরিবহনের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছি। তারা এখন ঘন্টায় ৬০ কিলোমিটার স্পিডে গাড়ি চালায়। তিনি বলেন মহাসড়কে অবৈধ যান বন্ধ করতে পারলে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। ঝিনাইদহ ট্রাফিক বিভাগ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে সড়কে শৃংখলা ফেরাতে।