ধর্ম ও জীবন

নামাজের সাওয়াব যে কারণে ভাগ হয়ে যায়

নামাজ ফরজ ইবাদত। ঈমান গ্রহণের পর মানুষের জন্য আবশ্যক ইবাদত এটি। অমনোযোগীতার ফলে নামাজের সাওয়াব ভাগ হয়ে যায়। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

যারা নামাজ আদায় করে কিন্তু অমনোযোগীতার কারণে নামাজের রুকন ও শর্তগুলো সঠিকভাবে আদায় করে না। ফলে নামাজে পরিপূর্ণ একাগ্রত ও খুশু-খুজু না থাকায় তারা নামাজের পুরিপূর্ণ সাওয়াব থেকে হয় বঞ্চিত।

তবে নামাজে একনিষ্ঠতা অবলম্বনকারীর জন্য রয়েছে নিষ্পাপ হওয়ার সুযোগ। সেসব নামাজিদের সতর্ক করতে ও নিষ্পাপ হওয়ার সুযোগ লাভে প্রিয়নবি ঘোষণা করেন-

হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসির রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, এমন লোকও আছে (যারা নামাজ আদায় করে কিন্তু নামাজের রুকন ও শর্তগুলো সঠিকভাবে আদায় করে না। ফলে নামাজে পরিপূর্ণ একাগ্রত ও খুশু-খুজু না থাকায় তারা নামাজের পুরিপূর্ণ সাওয়াব পায় না, তাদের নামাজের সাওয়াব এভাবে ভাগ হয়ে যায়-)

বরং তারা (নামাজের) দশ ভাগের ১ ভাগ, নয় ভাগের ১ ভাগ, আট ভাগের ১ ভাগ, সাত ভাগের ১ ভাগ, ছয় ভাগের ১ ভাগ, পাঁচ ভাগের ১ ভাগ, চার ভাগের ১ ভাগ, তিন ভাগের ১ ভাগ বা অর্ধাংশ সাওয়াব প্রাপ্ত হয়।’ (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ, বয়হাকি, নাসাঈ)

নামাজে অমনোযোগী কিংবা অবহেলা নয়, পরিপূর্ণ একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করা জরুরি। কেননা নামাজের সময় যেমন অন্য কোনো কাজ করা যায় না। তাই নামাজে অমনোযোগী হয়ে কোনো লাভ নেই। বরং পরিপূর্ণ একাগ্রতায় নামাজ আদায় করলে পরিপূর্ণ সাওয়াব লাভ করা যায়। হাদিসে এসেছে-

হজরত উক্ববাহ ইবনে আমির আল-জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যদি কোনো মুসলিম উত্তমরূপে ওজু করে তারপর নামাজে দাঁড়ায় এবং নামাজে সে যা কিছু বলছে বা পড়ছে (তেলাওয়াত, তাসবিহ, দোয়া, দরূদ ইত্যাদি) যদি সে জেনে বুঝে পড়ে থাকে, তাহলে সে নামাজ শেষে ওই দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে যায় যেদিন তার মা তাকে জন্ম দিয়েছে।’ (মুসতাদরেকে হাকেম, তারগিব)

অরন্য বর্ণনায় এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কেউ নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করে আল্লাহ যেমন সম্মান পাওয়ার যোগ্য ওই রূপ উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলে এবং স্বীয় অন্তরকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করলে সে নামাজ শেষে পাপ থেকে এমন পবিত্র হবে যেন তার মা তাকে ওই দিন ভূমিষ্ট করেছে।’ (মুসলিম, তারগিব)

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী পরিপূর্ণ একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে নামাজের পরিপূর্ণ সাওয়াব লাভ করা এবং সব গোনাহ থেকে নিষ্পাপ হওয়ার সুযোগ গ্রহণ করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পরিপূর্ণ একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। নামাজে অমনোযোগিতা থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button