জানা-অজানাঝিনাইদহ সদরটপ লিডদেখা-অদেখা

ব্রিটিশ আমলের ঐতিহাসিক ঝিনাইদহের তেঁতুলতলা বাজার

ঝিনাইদহের চোখ-
অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রমী একটি বাজার তেঁতুলতলা বাজার। ব্যত্রক্রমী এই কারণে যে, এই বাজারটির নামকরণ হয়েছে একটি তেঁতুল গাচকে ঘিরে। বাজারটির উপরেই দাঁড়িয়ে আছে শতবছরের একটি বিশালাকার তেঁতুলগাছ। এক সময় এই গাছটির নিচেই এলাকার হাট বসতো। গাচটিকে আধুনিকায়ন করা করে এলাকার মানুষ এখানে একটি বসার বেদি করে দিয়েছে। এই গাছটি পাদদেশেই সবধরনের যারবাহন দাঁড়ায়। এক কথায় বলা যায়, ব্রিটিশ আমলের তেঁতুলগাছটিই বাজারটিকে সন্তানের মতো ছায়া দিয়ে আগলে রেখেছে বছরের পর বছর।

আর এটি জনগুরুত্বপূর্ণ বাজার তো বটেই । কারণ, ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ মহসদকের মাঝামাঝি বাজার এটি। ঝিনাইদহ শহর থেকে মাত্র ৫ কিলো দূরেই এর অবস্থান। তেঁতুলতলা বাজারটির পশ্চিমে বিষয়খালী-কালীগঞ্জ, পূর্বে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়ন, পশ্চিমে বাজারটি যে ইউনিয়নে অবস্থিত মহারাজপুর ইউনিয়ন আর একেবরে উত্তরে ঝিনাইদহ শহর অবস্থিত।

মহাগুরত্বপূর্ণ এ বাজারটিতে সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। শুক্রবার ও সোমবার। একসময় মাত্র কয়েকটি দোকান থাকলেও এখন প্রায় শতাধিক দোকান বাজারটিতে অবস্থিত। বাজারের চারপাম দিয়ে চারটি সড়ক চলে গেছে চারদিকে। এই এলাকায় অধিক পরিমাণে ধানের চাষ হওয়ায় তেঁতুলতলা বাজারে রয়েছে কয়েকটি চাতাল। বড় বড় ধান ব্যবসাীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী, খুলনা থেকে প্রতিনিয়ত আসে এ বাজারে চাল কিনতে। বাজারটির পাশেই রয়েছে বেশ বড়-সড় একটি হাটচাঁদনি। এ বাজারের দক্ষিণ দিকে রয়েছে তেঁতুলতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আর উত্তরে রয়েছে ঝিনাইদহ বিদ্যুতের সাব-ষ্টেশন।

তেঁতুলতলা বাজারটিকে ঘিরে রয়েছে মসজিদ, মন্দিরসহ নানা বড়-বড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

বাজারে রয়েছে হরেক রকমের খাবারের দোকান, মুদিখানা দোকান, ডাক্তার খানা, মোটর সাইকেল সারা দোকান, সার ও কীটনাশকের দোকান। এই বাজার থেকে গ্রামে ঢুকতে সবসময় রয়েছে একটি দুইটি ভ্যান ষ্ট্যান্ড। ইচ্ছে হলে যে কেউ ইজিবাইকেও গ্রামে ভ্রমণ করতে পারবে।

তেঁতুলতলা বাজার ঝিনাইদহ জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এর আশপাশের গ্রাম গুলোর মধ্যে রয়েছে মাইধরপুর, ডাকাতিয়া , চুটলিয়ার মোড়।

একসময়ের ছোট্ট বাজারটি আজ হাজারো মানুষের ভীড়ে লেগেই থাকে। জনবসতি বাড়ার সাথে সাথে এ বাজারে বাড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এ বাজারটির পাশের কৃসি জমি অত্যন্ত উর্বর। বেশিরভাগ জমিতেই হয় বছরে তিনটি করে ফসল। তার মধ্যে ব্যাপকভাবে ধানের চাষ হলেও, সবজিতে কোন ভাবেই পিচিয়ে নেই এই অঞ্চল। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এখান থেকে শাক-সবজিও রফতানি হয়।

এককথায় ঐতিহাসিক বাজার এটি। কেননা ব্রিটিশ আমলের সেই রাস্তা আজ ৬ লেনে উন্নীত হতে যাচ্ছে খুব শিঘ্রই। রাস্তা ৬ লেন উন্নীতকরণের পর এই বাজার খুব স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসায়ীক কেন্দ্রবিন্দুতে রুপানিতইরত হতে যাচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button