ঝিনাইদহে এখনো কালাজ্বর রোগী শনাক্ত হচ্ছে
ঝিনাইদহের চোখ-
পুরানো রোগ কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব এখনো ঝিনাইদহ জেলাতে আছে। প্রতি বছরই কালাজ্বরের রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত বছর দুই জন কালাজ্বরে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে এক জনের বাড়ি শহরের কাঞ্চনপুর, অন্য জনের বাড়ি মহেশপুর উপজেলার রুলি গ্রামে।
কালাজ্বরের লক্ষণ হলো— দুই সপ্তাহের বেশি সময়কাল ধরে জ্বর, প্লিহা বড় হয়ে পেট ফুলে যাওয়া, ওজন কমে যাওয়া, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা ও দেহের শক্তি কমে যাওয়া।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলা কালাজ্বরপ্রবণ বলে চিহ্নিত। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় ৪৪১ জন কালাজ্বরের রোগী পাওয়া যায়। তবে এখন কালাজ্বরের রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন অফিসে কালাজ্বর নিমূর্লবিষয়ক অবহিতকরণ সভা শেষে জাতীয় কালাজ্বর নির্মূল প্রকল্পের ডাটা ম্যানেজার পংকজ ঘোষ এ তথ্য জানান।
তিনি এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে জানান, ব্রিটিশ ভারতে ১৮২৪ সালে যশোর জেলায় প্রথম কালাজ্বর শনাক্ত হয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। ১৮২৪ থেকে ১৮২৭—এই চার বছরের মধ্যে ৭৫ হাজার মানুষ কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তবে যশোর জেলায় সর্বশেষ ২০১৬ সালে একজন কালাজ্বরের রোগী পাওয়া যায়। তিনি বলেন, শুধু ঝিনাইদহ জেলা নয় দেশের ২৬ জেলার ১০০ উপজেলা কালাজ্বরপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত। কালাজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে। তিনি আরো বলেন, গত বছর (২০২১) সারা দেশে ৯৯ জন কালাজ্বর রোগী শনাক্ত হয়। তার মধ্যে চার জন মারা যান। চলতি বছরের এ পর্যন্ত সারা দেশে ৪২ জন কালাজ্বর রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন এক জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন জাতীয় কালাজ্বর নির্মূল প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কালাজ্বর মুক্ত করা হবে।
কালাজ্বরের বাহক বেলে মাছি (স্যান্ডফ্লাই) স্যাঁতসেঁতে জায়গায় থাকে এবং লাফিয়ে চলে। এ মাছি কালাজ্বরের জীবাণু বহন করে। সুস্থ মানুষকে কামড় দিলে সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়। দ্রুত সময়মতো চিকিৎসা না করলে রোগী মারা যায়। একটি ইনজেকশনে কালাজ্বর সেরে যায়। ব্যয়বহুল হলেও সরকার বিনা মূল্যে কালাজ্বরের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে।