বাপদাদার পেশা টিকিয়ে রাখতে কঠিন যুদ্ধে কোটচাঁদপুর কামাররা
আব্দুল্লাহ বাশার, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার পেশাদার কামারদের মাঝে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কুরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরিতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্তাতা ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কামার পল্লীতে কেউ আসছেন পুরোনো ছুরি, কাঁচিতে শান দিতে। কেউ আসছেন নতুন কাজের অর্ডার নিয়ে। ঈদ কে সামনে রেখে পশু কোরবানির বড় ছুরি, ছোট ছুরি, চাপাতি, বটির চাহিদা বাড়ছে। তাদের দোকানে টুং টাং শব্দ করে তৈরি হচ্ছে একেকটি ধারালো উপকরণ।
কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার সরকারি কে এম এইচ ডিগ্রি কলেজ রোডের স্বপন কর্মকার কাজের ফাঁকেই বলেন, ৩০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে আছি আমি। সারা বছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও বছরে কুরবানি ঈদে কাজের ব্যস্ততা দু’গুণ বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে লোহা, কয়লা ও বিদ্যুৎতের বেশি হওয়ায় কাজ খুব কম হচ্ছে বলে তিনি জানান। দাম শুনে নতুন জিনিস তৈরি করতে চাচ্ছে না। আমাদেরও কিছু করার নেই সবজিনিসে দাম দ্বিগুণ।
পাল পাড়ার মন্টু কর্মকার বলেন, এ বছর কাজ কম, ক্রেতার ভিড় কম, লৌহার দাম বেশি থাকার করনে আমার কাজের চাপ কম। আর বছর করোনা কালীন সময়ে ও একটু জিরানোর সময় পাইনি, সারা রাত্র জেগে কাজ করেছি। এখন দিনের বেলাই টুকি টাকি কাজ করছি।
বাসুদেব কর্মকার বলেন, বাপদাদার আমল থেকে এই পেশা আমি পর্যন্তই শেষ। আমার ছেলেরা এই কর্ম করে চলতে পারবে না, হারিয়ে যাবে। সরকারের থেকে সহোযোগিতা না করলে আমাদের বাপদাদার এই পেশা থেকে অনেকে সরে দাড়াবে।
বলুহর গ্রামের ক্রেতা আমিরুল ইসলাম বলেন, কোরবানির গরুর মাংস কাটার জন্য নতুন চাপাতি কিনতে এসেছি। তৈরি করা তেমন ভালো চাপাতি পাচ্ছি না। তাই দুই কেজি ইস্পাত কিনে নতুন চাপাতি বানাতে দিলাম। আগের চেয়ে দাম দ্বিগুণ।
ক্রেতা আলম বলেন, আমার এলাকা কামারের দোকান নেই তাই শহরে এসেছি, এবছর চাপাতি, ছুরি সহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি দাম অনেক বেশি সাধারণত মানুষের নাগালের বাইরে। তাই পুরাতন তা ধার কাটিয়ে নিলাম।
এ বিষয় সমাজ সেবা অফিসার জহুরুল ইসলাম বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে আমাদের এখানে এখনো আসেনি আসলে তাদের ট্রেনিং এর মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।