ঝিনাইদহে ভুট্টা বীজের চটকদারি বিজ্ঞাপনে দিশেহারা কৃষক
মনজুর আলম, ঝিনাইদহ –
চলছে ভূট্টা লাগানোর ভরা মৌসুম। আর এই মৌসুমে ঝোপ বুঝে কোপ দিচ্ছেন ভুট্টা বীজের মালিকরা। বাহারি রঙের ভূট্টা বীজের প্যাকেটে ছয়লাব হয়ে গেছে বাজার। দোকানে চাষি বীজ কিনতে গেলেই কোম্পানির লোকজন দিচ্ছেন নিজ নিজের ভূট্টা বীজে ফলনের নানান প্রতিশ্রুতি। ফলে চাষিরা বীজ কিনতে এসে বারবার পাল্টাচ্ছে সিন্ধান্ত। পাশাপাশি গত বছরের তুলনায় বীজের দাম নিয়েও রয়েছে ভিন্নতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে সাকসেস ৫৫, বাম্পার ৫৫, রকেট ৫৫, ৭৭২০,৭৮৮৪, মারজানা ৭১৫৫, বিজয় ৭১, কৃষক রাজা ৫৫, বালাজি ৪৫৫৫ সহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ প্রকার ভূট্টা বীজ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বীজ বিক্রি করার জন্য মানা হচ্ছে না তেমন কোন আইন কানুন, মুদি দোকান, বীজ বিক্রির জন্য লাইসেন্স না থাকলেও অবাধে বিক্রি করছেন কিছু অসাধু ব্যাবসীগন।
আবার যে সকল ভূট্টা ব্যাবসায়ী মৌসুমে কৃষকের নিকট থেকে ভূট্টা কিনে থাকেন, তারাও বিভিন্ন নামসর্বস্ব কোম্পানির নিকট থেকে বীজ কিনে কৃষককের নিকট অধিক মুনফার জন্য এক প্রকার দাদন হিসেবে দিয়েছেন। কৃষক জমিতে ভূট্টা কেটে বাজারে বিক্রি করার সময়ে তারা এই বীজের দাম নিবেন। এই অবস্থা ঝিনাইদহ সীমান্ত সরোজগজ্ঞ, খাঁড়া গোদা, মোহাম্মদপুর, গড়াই টুপি, গহেরপুরসহ কোটচাঁদপুর উপজেলার সাব্দারপুর সীমান্তে ব্যাপক ভাবে বিস্তার লাভ করেছে।
ভুক্তভোগী কয়েকজন কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সময়ে তাদের নিকটে তেমন টাকা থাকে না। মাঠে ধান কাটা শুরু হলেও সার কীটনাশক দোকানে বাকী থাকা অবস্থায় দোকান মালিক বেশি বাকী দিতে চান না। সেই সুযোগে এসকল মহাজন সুযোগে বাকীতে ভূট্টা বীজ দিয়ে থাকেন। তারা সাময়িক সুবিধা পেলেও অসহায়ের মতো বাধ্য হয়ে বীজ নিচ্ছেন, কিন্তু বীজের গুনগতমান যেমন আছে ধুয়াশা, তেমনি নিজেদের ইচ্ছেমত বীজ কিনতে না পরায় মনের কষ্ট কিছুটা থেকেই যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাজারে যত প্রকার বীজ কোনটা লাগাবো বুঝতে পারছি না। প্রত্যেক কোম্পানির বীজ বিক্রি করার জন্য মাঠ কর্মি রয়েছে। তারা নিজেদের কোম্পানির বীজ নিয়ে গুন গান করছেন। আবার ফলনেও দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রতি। বাধ্য হয়ে যে দোকান দারের সাথে সার কীটনাশক বিষের লেনদেন করা হচ্ছে তিনি যা দিবেন সেই বীজটি লাগানো হবে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতর জানান, ভূট্টা লাভ জনক ফসল। চলতি মৌসুমে জেলায় ১৫ হাজার ১১২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে।#