ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ব্যবহার অযোগ্য গান্না সড়কে ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ ।। কারো কোন মাথা ব্যথা নেই

ঝিনাইদহ চোখ-

জেলা শহর থেকে কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের যোগযোগ মাধ্যম ঝিনাইদহ-কোটচাঁদুপর গান্না সড়কটি সংস্কারের জন্য খুড়ে রাখা হয়েছে দির্ঘদিন ধরে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সংস্কার না করার কারনে ধুলা বালিতে রাস্তার পাশে বসবাসকারিদে স্বাস্থ ঝুকিতে রয়েছে। গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি এলাকার ১ কিলোমিটারের অধিক সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২১ সালে খোড়া হয়েছিল। যা আজ পর্যন্ত কাজটি শেষ করা হয়নি। যার ফলে রাস্তার পাশের ফসলী জমি, বাড়ি-ঘরসহ সড়কের পাশে বসবাস কারি বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুকিতে।

এরই প্রতিবাদে ফেলে রাখা সড়ক সংস্কারের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসি। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারী) বেলা ১২ টার দিকে ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর সড়কের কালুহাটি মাদ্রাসার সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন ওই গ্রামের সচেতন মহল। এসময় ঝিনাইদহ থেকে গান্না হয়ে কোটচাঁদপুরগামী সকল যান-চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ ওই সড়কে সাধারণ যাত্রীরা। এসময় বিক্ষোভে সমাবেশে অংশ নেয় কালাহাটি গ্রামের সাধারন মানুষ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও ভোক্তিভোগীরা।

বিক্ষোভ কারীদের মধ্যে হাবিল, রেফা আহম্মেদ, আসাদুজ্জানাম ও সোহাগ জানান, সড়ক সংস্কার করতে গিয়ে রাস্তা খুড়ে গত ১৪ মাস ধরে ফেলে রেখেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার মাসুম দিনের পর দিন মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। এভাবে মাসের পর মাস ফেলে রাখার কারণে ধুলায় বাড়ি-ঘর, ফসলী জমি নষ্ট হচ্ছে। অসুস্থ হয়েছে সড়কের পাশের বসতিরা। ধুলার কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সড়কে চলাচলকারীদের। তাই দ্রæত সড়ক সংস্কারের দাবী জানান তারা। প্রায় ২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ চলার পর সংশ্লিষ্টদের আশ^াসে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। তবে নির্ধারিত সময়ে বাদি মানা না হলে আবারো বড় ধরনের পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান তারা।

কালুহাটি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জানান, বাড়িতে বয়স্কো মহিলা রয়েছে। রাস্তার ধুলার কারনে শ^াসকষ্ট ও এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আবার ধুলার কারনে বাড়ির কাপড়গুলো একদিনের বেশি ব্যবহার করা যায় না। তারা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের জীবন নিয়ে খেলছে।

একই গ্রামের মহাসান জানান, গ্রামের বেলে খাল থেকে শৈলমারি বাজার পর্যন্ত সড়কটি একবছরের বেশি সময় ধরে খুড়ে রেখে দিয়েছে। যার কারনে বাড়ির আঙ্গিনায় লাগানো সবজি ও ফলের গাছে ধুলাই ভরে গেছে। বাড়িতে রান্না করতে গেলেও ধুলাই ভরে যায়। কোন উপায় না পেয়ে ওই নষ্ট খাবার গুলই খেতে হচ্ছে তাদের। দ্রæত সময়ের মধ্যে এই রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে আশেপাশের লোকজন সবাই অসুস্থ হয়ে পড়বে।

কালুহাটি গ্রামের আছিয়া খাতুন জানান, রাস্তাটি খুড়ে রাখায় ধুলার কারনে বাড়ির ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারেনা, মুখে মাক্স পড়েও চলাচলা করতে পরেনে। ধুলর কারনে ডায়রিয়া, এ্যাজমাসহ শ^াসকষ্টের মত রোগ হচ্ছে, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি তাদের।

গান্না ইউনিয়নের চেয়াম্যান মোঃ আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, আমাদের এই সড়কটি জনগণের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা প্রতিনিয়ত উপজেলা এলজিইডি অফিসে তাগাদা দিয়ে আসছি। আজ ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসারদের সাথে কথা হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারী থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ শুরু করার আশ^াস দিয়েছে। আশা করি দ্রæত সময়ের মধ্যে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আহসান হাবিব বলেন, আমরা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছি। তাদের কাজের বিলও এখনো দেওয়া হয়নি। গত ১১ জানুয়ারী ঠিকাদার মাসুমকে নোটিশ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য বলা হয়েছে। আশা করি দ্রæত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ হবে এবং ওই অঞ্চলের মানুষ ধুলার হাত থেকে রেহায় পাবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button