আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঝিনাইদহে
ঝিনাইদহের চোখঃ
তরুণ চিত্রনাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনেতা স্বপন বিশ্বাস নিজের কাজ এবং মিডিয়ার সমসাময়িক বিষয়ে কথা বলেছেন সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে।
আপনার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কোথায়?
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঝিনাইদহে। আমি দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঝিনাইদহ কেসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করি। তারপর ঢাকা চলে আসি। ঢাকাতে পড়াশোনার পাশাপাশি থিয়েটার করি। তারপর এক দিন সাঈদ তারেক ভাই এটিএন বাংলার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান কমেডি আওয়ারের জন্য ডাকলেন, তার হাত ধরেই আমি মিডিয়ায় ঢুকে পড়লাম। নির্মাতা পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি
বর্তমান কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
বর্তমান হাতে অনেক নতুন প্রজেক্টের কাজ। অধিকাংশই বিজ্ঞাপনের কাজ। এর মধ্যে কিছু শুটিং করা হয়েছে বাকিগুলোর শুটিং খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে।
সম্প্রতি আপনি নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনের মান কেমন?
জি, আমি বেশ কিছুদিন ধরেই নাটকের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি একটি সফটওয়্যার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করলাম। সামনে আরও দুটি বিজ্ঞাপনের কাজ হাতে রয়েছে। আমার সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা বলে আমাদের দেশে নাটক যেমন আন্তর্জাতিক মানের তেমনি আমাদের বিজ্ঞাপনের মানও যথেষ্ট ভালো। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে একটা সময় ছিল শুধু সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দেওয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে বিষয়ভিত্তিক এবং প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
সম্প্রতি আপনার পরিচালনায় কোন নাটক প্রচারিত হয়েছে?
গত মার্চে শফিকুর রহমান শান্তনুর রচনায় এবং এনটিভিতে প্রচার হওয়া নাকফুল নাটকটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। নাটকটিতে ছোট পর্দার এ সময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী আবদুর নূর সজল ও শবনম ফারিয়া অভিনয় করেছেন। এখানে একজন ট্যাক্সিক্যাবচালক আর একজন গার্মেন্টকর্মীর মধ্যকার ভালোবাসার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
আপনি অভিনয়, নাটক নির্মাণ ও বিজ্ঞাপন নির্মাণের কাজ করছেন নিজেকে কী পরিচয় দিতে পছন্দ করেন?
আমি স্কুল, কলেজজীবন থেকেই থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। প্রথম জীবনে অভিনয়ের মাধ্যমেই আমার মিডিয়ায় প্রবেশ কিন্তু পরবর্তীতে নাটক এবং বিজ্ঞাপন নির্মাণ শুরু করার পর বুঝতে পারলাম এটাই আমার আসল ঠিকানা। তাই নিজেকে একজন নির্মাতা পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
ধারাবাহিকে কাজ করার ইচ্ছে আছে কি না?
বর্তমানে একক নাটক এবং বিজ্ঞাপন নিয়ে ব্যস্ত আছি। তবে সামনে ধারাবাহিক নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।
বাংলাদেশের ধারাবাহিকের মান তুলনামূলক কম ভালো হওয়ার কারণ কী?
প্রথমত, বাজেট। ভারতীয় একটি ধারাবাহিক শুরু হয় বড় বাজেট নিয়ে কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের দেশে বাজেট অনেক কম, ফলে মানের দিক দিয়েও তাদের চেয়ে অনেক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। কারণ, বাজেট বড় হলে অনেক বড় বড় আর্টিস্টকে একসঙ্গে নিয়ে একটি ভালোমানের কাহিনী চালানো যায়, কিন্তু বাজেট যখন কম হবে তখন কাজের পরিধিও ছোট হয়ে আসবে। তা ছাড়া আমাদের দেশের ধারাবাহিকগুলো কম জনপ্রিয়তা হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে, চ্যানেলের আধিক্য। আমাদের যে পরিমাণ টিভি চ্যানেল রয়েছে ভারতে কিন্তু ততটা নেই। বেশি বেশি ধারাবাহিক প্রচার করতে গিয়ে মান হারাচ্ছে আবার দর্শকরা স্বভাবে কোনো একটি চ্যানেলের ধারাবাহিক গ্রহণ করছে না।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সবার থাকে আমারও আছে। আমি নাটক নির্মাণ এবং বিজ্ঞাপন নিয়ে আরও বেশি বেশি কাজ করার ইচ্ছা আছে। সেই সঙ্গে মিডিয়ায় নিজের একটা অবস্থান তৈরি করতে চাই। এখনো সে অর্থে খুব বেশি কিছু করা হয়ে ওঠেনি। আমার একটা লক্ষ্য হচ্ছে, সবার ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করা। আমি আশা করি, আমার কাজের মাধ্যমে সে আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে সক্ষম হব।
দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলুন…
প্রিয় দর্শকদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আপনারা পাশে থাকলে, সহযোগিতা করলে অনেক ভালো কাজ উপহার দিতে সক্ষম হব। আর সবাইকে অনুরোধ জানাবো আপনারা দেশের প্রতি ভালোবাসাবোধ থেকে নিজেদের দেশের কাজ দেখবেন। সবার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা ও শুভকামনা।