হবিগঞ্জের শুঁটকি নদী
ঝিনাইদহের চোখঃ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদীগুলোই এ দেশের প্রাণ। ছোট-বড় শতাধিক নদী জালের মত ছড়িয়ে রয়েছে এ দেশ জুড়ে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, কর্ণফুলী, ধলেশ্বরী, করতোয়া, সুরমা, তিস্তা, আড়িয়াল খাঁ, বংশী, ডাকাতিয়া, কীর্তনখোলা, কুমার, কুশিয়ারা, ঘাঘট, কংস, মাতামুহুরী, সাঙ্গু, যমুনেশ্বরী, চিত্রা, গড়াই, দুধকুমার, মহানন্দা আরো যে কত নাম না জানা নদী রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবে না।
তবে গতানুগতিক নামের বাইরের একটি নদী হলো শুঁটকি নদী। খালের মতো সরু বলে এমন নামকরণ হয়েছে কিনা বলা মুশকিল। নামটা বিদঘুটে হলেও শুঁটকি নদীর শীর্ণ ধারা দেখতে কিন্তু দারুন লাগে। শুকনো মৌসুমে এ নদীর পানি যত কমে এর রুপ আর গুণ যেন ততই বাড়ে।
নদীনির্ভর মানুষের জীবন-জীবিকার রসদ যোগানো শুঁটকি নামের এ নদী বইছে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং জনপদের বুক চিরে। গৃহস্থর হাতের গবাদি পশুই হোক বা জেলেদের হাতে মাছ ধরা; প্রতিদিনের জীবনধারায় এ নদী জড়িয়ে আছে নিবির মমতায়।
পর্যাপ্ত মাছ থাকায় এ নদীতে জেলেদের আনাগোনা বেশি। প্রতিবছর জেলেরা লিজ নিয়ে এখান থেকে ছোট-বড় নানান জাতের মাছ ধরে থাকেন। নদীর দু’পারের বিস্তীর্ণ প্রান্তর বর্ষায় হয়ে ওঠে গুলনামের হাওর আর শুকনো মৌসুমে গবাদি পশুর চারণ ভূমি।
বানিয়াচং থানা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে এ নদীর ধারা গেছে পূর্ব থেকে পশ্চিমে। ভরা বর্ষার সময়টা বাদ দিলে শুঁটকি বেশ শান্তশিষ্ট নদী। মানুষজনের ভিড়ভাট্টা তেমন একটা না থাকায় জলের প্রাণীদের জন্য এই নদী অভয়ারণ্য। বাইরের চোখ দিয়ে দেখলে মনে হয় নদীজীবী মানুষের জীবন আর শুঁটকি নদী মিলেমিশে বইছে যেন একই ধারায়।
দৈর্ঘ্যে ছোট আর প্রস্থে শীর্ণ হলেও স্নিগ্ধ রূপের মায়া নিয়ে বয়ে চলেছে হবিগঞ্জের এই নদীটি।