#ঝিনাইদহের চোখঃ
এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের উত্তরপাড়ায় সানজিদা খাতুন চিন্তা নামের এক কিশোরী আত্মহত্যার প্ররোচনায় তার প্রেমিক এটিএসআই (সহকারী টাউন উপপরিদর্শক) এস এম ফাত্তা ওরফে রেন্টু এখনো অধরা রয়েছেন।
গত ১৯ জুন সানজিদা খাতুনের পিতা মশিয়ার রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় রেন্টুসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন রেন্টুর স্ত্রী কণিকা খাতুন, সাবেক ইউপি সদস্য মোস্তাক রাজা এবং অনিসুর রহমান পতু। আসামি রেন্টু বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলার বারোবাজার হাইওয়ে পুলিশে কর্মরত। রেন্টু নিহতের প্রতিবেশী মতিয়ার রহমানের ছেলে।
মামলা দায়ের করার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ফলে বাদীর পরিবার চরম সংকটের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন।
মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, সানজিদা খাতুন চিন্তা মেহেরপুর সরকারি কলেজের স্নাতকের ছাত্রী। আসামি রেন্টু ও চিন্তার বাড়ি পাশাপাশি। আসামি রেন্টু পুলিশের এটিএসআই পদে ঝিনাইদহ জেলার বারো বাজার হাইওয়েতে কর্মরত রয়েছেন। বাদীর মেয়ে চিন্তা আসামির মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর জন্য প্রায় প্রতিদিনই তার বাড়িতে যেত। এ সুযোগে রেন্টুর সাথে চিন্তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় একে অপরকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আসামি রেন্টু চিন্তাকে ফুসলিয়ে তার কর্মস্থলে নিয়ে গিয়ে কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এর পরপরই আসামিকে চিন্তা বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। একসময় আসামি রেন্টু চিন্তাকে হুমকি দিয়ে ‘বিয়ে করতে পারব না’ বলে বলেন, পারলে আত্মহত্যা করে মরে যা।
পরে বিষয়টি আসামির স্ত্রী মামলার দ্বিতীয় আসামি কণিকা খাতুনকে জানালে কণিকাও চিন্তাকে বলে গলায় দড়ি দিয়ে মরতে পারিস না, তুই একটা খারাপ চরিত্রের মেয়ে বলে ভর্ৎসনা করে এবং আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। আসামিদের ভর্ৎসনা সহ্য করতে না পেরে চিন্তা ১৯ জুন সকালে নিজ বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করে এবং এক টুকরো কাগজে কিছু কথা লিখে যায়। চিরকুটে লেখা কথাগুলো ছিল, রেন্টু আমাকে বাঁচতে দিল না, এর শাস্তি দিতে হবে। আমি চায় তাদের জীবনটা নরক বানাবি, শ্যামলী আমি তোর বোন হলে রেন্টু ও কণিকার শাস্তি দিবি’।
মামলার এক সপ্তাহ পার হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে না পারায় এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বাদীর পরিবারের সদস্যরা সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
অভিযুক্ত এটিএসআই রেন্টুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান জানান, মামলা হওয়ার পর আমরা বিভাগীয়ভাবে ঊর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষের কাছে ইনটিমেশন চিঠি দিয়েছি। চিঠি পাওয়ার পরপরই সে সাময়িক বরখাস্ত হবে। বরখাস্তের চিঠি এখনো আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। চিঠি হাতে পেলেই আমরা গ্রেপ্তারে অভিযান চালাব এবং মামলার সব আসামিকেই আইনের আওতায় আনা হবে।