#অরিত্র কুণ্ডু, ঝিনাইদহের চোখঃ
আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর আগে ঘটেছিল ভয়াবহ ফুলহরি ট্র্যাজেডি। সেদিন বরযাত্রা পরিণত হয়েছিল শবযাত্রায়। ১২ জনের অকাল মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নাড়া দিয়েছিল পুরো দেশকে। ২০১৪ সালের ১লা আগষ্ট ঝিনাইদহের বারোবাজার রেলক্রসিং এ গেটম্যানের অবহেলার কারণে ট্রেনের ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পরে বরযাত্রীবাহী বাসটি।
ওই ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু আর অর্ধশতাধিক আহতদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছিল ফুলহরির আকাশ-বাতাস। ফায়ার সার্ভিস আর সাধারণ মানুষের অক্লান্ত চেষ্টায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, ঘটনার পাঁচ বছর পরও নিহত ও আহতদের পরিবারে সেই আর্তনাদ এখনো থামেনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ হারিয়ে কেউ আছেন অভাব-অনটনকে নিত্য সঙ্গী করে। চিকিৎসার অভাবে যন্ত্রণা সঙ্গী করে দিন পার করছেন আহতদের কেউ কেউ।
আহতদের অনেকে এখন, রাতে আঁতকে উঠেন ঘটনার ভয়াবহতার দুঃস্বপ্ন দেখে।পাঁচ বছর পরও দেশের অধিকাংশ রেলক্রসিং এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঘটনার পর দায়ের হওয়া মামলার বিচার নিষ্পত্তি হয়নি পাঁচ বছরেও। এমন অবস্থায় পালিত হচ্ছে ফুলহরি ট্র্যাজেডির ৫ম বার্ষিকী।
সেদিনের ঐ দূর্ঘটনায় নিহত হয় ১২ জন। আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক।যাদের প্রত্যেকের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামে।পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ হারিয়ে অনেক পরিবার পথে বসেছে। আহত স্বজনকে নিয়ে কেউ কেউ দুঃসহ দিন পার করছেন।
একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে দিনযাপন করছে পিতা-মাতা। ঘটনার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে ও সরকারের পক্ষ থেকে যে সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছিল তা পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না আহতদের কয়েকজন। এমন অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে দিন পারছেন তারা।
উল্লেখ্যঃ- সেদিন কালীগঞ্জ উপজেলার সাকো মথনপুর গ্রামের সুবাস কুমারের মেয়ে জ্যোৎস্না বিশ্বাসের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামের সাধন কুমার বিশ্বাসের ছেলে তাপস কুমার বিশ্বাসের।গ্রামের ছেলের বিয়ে, তাই বাস বোঝাই করে বরযাত্রী হয়ে ফুলহরি থেকে সাকো মথনপুরে গিয়েছিলেন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। বিয়ের আসরেও সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। এরই মধ্যে শেষ রাতের পাখিটি বয়ে আনে দুঃসহ স্মৃতির বার্তা। বউ নিয়ে নিজেদের গ্রামে ফেরার পথে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে বারোবাজার রেলক্রসিংয়েই ঘটে দুর্ঘটনাটি।