ঝিনাইদহের শৈলকুপার দুটি ইউনিয়নে খরস্রোতা গড়াই নদীর ভাঙ্গনে ৬টি গ্রামের বসত বাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। প্রতিরক্ষাবাধে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ার পর থেকে আতংকিত হয়ে পড়েছে এলাকার জনপদ। নদীর হিংস্র থাবায় এ উপজেলার ধলোহরাচন্দ্র ও সারুটিয়া ইউনিয়নের নদীর পাড় ভিত্তিক গ্রামগুলোর ফসলি জমি ও বাড়ির একাংশ হারিয়ে গেছে। নদীর করাল গ্রাসে হুমকির মুখে পড়েছে পার্শ্ববর্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার সহ অনেক বসতি। এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ জরুরী বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছেন।
ধলোহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানায়, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ধলোহরাচন্দ্র ও সারুটিয়া ইউনিয়নের গড়াই নদীর পাড় ভিত্তিক উলুবাড়িয়া, মাঝদিয়া, বন্দেখালি, কাশিনাথপুর, কৃত্তিনগর ও বরুলিয়ার চর গ্রামগুলো এখন হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিরক্ষাবাধ ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় প্রায় একশত বিঘার ফসলি জমি ও ২০টি বাড়ির একাংশ নদীর গ্রাসে হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির কারনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই নদীর এ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।
নদী পাড়ের ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ জানায়, নদীর হিংস্র থাবায় যে কোন সময় গ্রামের আরও শত শত বিঘার ফসলি জমি ও শতাধিক বাড়ি ও লাঙ্গলবাধ বাজার এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর প্রবল স্রোত আর ভারি বর্ষনে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা আগ্রাসী রুপ ধারন করছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত দু-মাসের ব্যবধানে নদীর ভাঙ্গন দেখা দেওয়ার পর থেকে উপজেলার উলুবাড়িয়া ও মাঝদিয়া গ্রামের শফিক হোসেন, নুজাই মন্ডল, শরিফুল ইসলাম, কবির হোসেন ও হাকিমের মত অনেকে নিজ বসত ভিটা ছেড়ে অন্যত্রে চলে গেছেন। আতংকে আছেন আরও অর্ধশতাধিক পরিবার ।
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ উসমান গণী জানায়, কুষ্টিয়া থেকে ভাটিতে আসা গড়াই নদী ঝিনাইদহের শৈলকুপার লাঙ্গলবাধ পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার অংশে প্রবাহিত। ১৯৯০ সালের পর থেকে বছরের পর বছর এ নদীর ভাঙ্গনের করাল গ্রাসে দুটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক পরিবার বসত ভিটা ও ঘর বাড়ি ছেড়ে পথে বসেছে।
স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, দ্রুত নদী ভাঙ্গন ঠেকানো না গেলে গ্রামের শত শত পরিবার পথে বসবে। সে কারনে প্রতিরক্ষা বাধের দাবি জানিয়েছেন।
তবে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সরোয়ার জাহান সুজন জানায়, জরুরী ভিত্তিকে বাঁধ নির্মানের জন্য প্রকল্প চেয়ে উদ্ধতৃন কতৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা নিয়মিত মনিটরিং করে যাচ্ছি । তবে বরাদ্ধ পেলেই কাজ শুরু করা হবে বলে জানান।