জানা-অজানাটপ লিডমহেশপুর

মহেশপুরে হানাদার বাহিনীর গুলিতে নিহত নাজিম উদ্দীনের পরিবার স্বীকৃতি চায়

মো: আজাদ, ঝিনাইদহের চোখঃ

দেশ স্বাধীনের ৪৮ টি বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু ঝিনাইদহের মহেশপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির গুলিতে নিহত নাজিম উদ্দীনের পরিবার আজও শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাইনি। আর কত বছর পার হলে এই অসহাই পরিবারটি শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাবে?

দেশ ও দেশের মানুষের রক্ষা ও লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে সেদিন ঝাপিয়ে পড়েছিলেন নাজিম উদ্দীন। কিন্তু পাকিস্তানের পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা নাজিম উদ্দীন ধরে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনীর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের খেজুর বাগান ক্যাম্পে। সেখানেই নাজিম উদ্দীনসহ শত শত মানুষকে নির্মমভাবে গুলি করে আর গেনেটদিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হয়। হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত নাজিম উদ্দীন ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌর এলাকার ক্যাম্প পাড়ার পরেশ মন্ডলের ছেলে।

এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নাজিম উদ্দীন ছিলেন মোজাহিদ বাহিনীর একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সদস্য। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলায় পাক হানাদার বাহিনীর সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ করে ফিরে আসেন। ওই সময় তার ছেলে ওয়াজেদ আলীর বয়স মাত্র ৭ মাস। ছেলে অসুস্থ্য থাকায় তার জন্য ঔষধ কিনে শ্বশুর বাড়ীতে যান নাজিম উদ্দীন।

এসংবাদ রাজাকাররা পেয়ে পাকিস্তানি পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে খবর দেয়। পরে তারে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা শ্বশুর বাড়ী যোগীহুদা গ্রাম থেকে নাজিম উদ্দীন ও তার শ্বশুর হাসমত আলীকে অস্ত্রসহ ধরে নিয়ে আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে তাদের খেজুর বাগান ক্যাম্পে। সেখানেই তাদেরকে অমানষিক ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধারা আরও জানান, সেই খেজুর বাগানটি এখন বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছ্।ে প্রতিবছর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তারা বিভিন্ন দিবসে মোমবাতি প্রজলন করে থাকেন।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দীন জানান, দীর্ঘ ৪৮ বছরেও দেশের জন্য যাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে জীবন দিতে হয়েছে সেই নাজিম উদ্দীনের পরিবার এখনও শহীদ পরিবারের পর্যাদা পায়নি। যে মর্যাদাটি দেশ স্বাধীনের পরেই হওয়ার কথা ছিল। আর কত বছর পার হলে নাজিম উদ্দীনের পরিবার শহীদ পরিবারের স্বীকৃতি পাবে তা আমার জানানেই।

পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী আব্দুস সাত্তার জানান, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যে নাজিম উদ্দীন লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনার জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে সাত দিন খেজুর গাছের সাথে বেঁধে অমানষিক ভাবে নির্যাতন করে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে ক্যাম্পের খেজুর বাগানে নাজিম উদ্দীনসহ অংখ্য লাশ পুতে রেখেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির সদস্যরা। যে আজ বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছ্।

যুদ্ধাকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, দেশের জন্য জীবন দিয়েও আজও নাজিম উদ্দীনের পরিবার শহীদ পরিবারের মর্যাদা পায়নি। এটা আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। জানিনা শহীদ পরিবারের মর্যাদা নাজিম উদ্দীনের পরিবার কবে পাবে?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button