ঝিনাইদহে ব্রীজে ফাটল-পলেস্তার খুলে রড বের হয়ে গেছে/৭০ গ্রাম মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল
ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের রাস্তার উপর নির্মিত ব্রীজ। সবাই ডেফলবাড়ি ব্রীজ নামেই চেনে। প্রায় ৫০ বছরের বেশী সময় আগে এপাশ-ওপাশ মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে বেগবতি নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল ।
ডেফলবাড়ী এলাকার ষাটোর্ধ গোলাম মোস্তফা বলেন, শিশু বয়স থেকেই তিনি সেতুটি দেখছেন। কবে এর শেষ মেরামত হয়েছে তা তিনি মনে করতে পারছেন না। উপরে ফাটল, আর নিচে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ধসে পড়ছে চাক চাক পলেস্তারা। মোটা রডগুলো মরিচা ধরে খসে পড়ছে।
পাশের গ্রাম রামনগরের বাসিন্দা রং মিস্ত্রি জহির রায়হান জানান, ঝিনাইদহ-কোটচাঁদপুর ভায়া জিয়ানগর সড়কের ডেফলবাড়ি নামক স্থানের সেতুটি স্থাপিত। ৫০ ফুট লম্বা সেতুটির উপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। পার্শ্ববর্তী ৬ টি ইউনিয়নের ৭০ গ্রামের মানুষও এই সড়ক দিয়ে ঝিনাইদহ ও কোটচাঁদপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। যে কোনো সময় এটি ধসে পড়ে একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে একটি সড়ক কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর উপজেলা হয়ে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায় মিশেছে। যেটি আঞ্চলিক মহাসড়ক। এই সড়কের পশ্চিমে রয়েছে সদর উপজেলার পাগলাকানাই, গান্না, মধুহাটি, মহারাজপুর, কুমড়াবাড়িয়া ও কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়ন। এই ছয়টি ইউনিয়ন সংযোগ রেখে চলে গেছে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই হতে কোটচাঁদপুর শহর পর্যন্ত আরেকটি জেলা সড়ক। যার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। এই সড়কের জিয়ানগর থেকে পশ্চিমে আরেকটি সড়ক গিয়ে সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে মিশেছে। পূর্বে চলে গেছে কালীগঞ্জ শহর। এটি কালীগঞ্জ-ডাকবাংলা ভায়া জিয়ানগর সড়ক হিসেবে পরিচিত। এটির দূরত্ব ২১ কিলোমিটার। এই সড়কগুলোর পার্শ্ববর্তী এলাকায় কমপক্ষে ৭০ টি গ্রাম রয়েছে। গ্রামগুলোতে হাজার হাজার মানুষ বসবাস করেন। এই মানুষগুলো ঝিনাইদহ আর কোটচাঁদপুর হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। এছাড়া সড়কটিতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। তালসার, জিয়ানগর, চন্ডিপুর, শৈলমারি, সমাজকল্যান, ফুলবাড়ি, কুশনা, বাজারগোপালপুর, বেলেখাল সহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় বাজার রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুটির উপরে বেশ কয়েকটি ফাটল দেখা দিয়েছে। আর নিচে গেলে ভংঙ্কর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। সেখানে পলেস্তারা খুলে খুলে পড়ছে। ফাটলগুলোও বেশ বড় দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে ঢালাই খুলে খুলে পড়ছে। যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে। প্রাণহানীর আশংকাও রয়ে গেছে।
ডেফলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আক্কাচ আলী জানান, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবার বিষয়টি তারা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত করেছেন। কিন্তু এখনও এটি নতুন করে নির্মানের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, দ্রুত খোজ খবর নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলে এটি নতুন করে নির্মান করা হবে বলে জানান।