ঝিনাইদহের চাতাল শ্রমিক শাহজাহানের ৩০ বছর কেটে গেল খাল পাড়ের ঝুপড়িতে
ঝিনাইদহের চোখ-
বয়স ও দারিদ্রতার ভারে শাহজাহান এখন খুবই ক্লান্ত। জীবণের প্রাপ্তি বলতে কিছুই অবশিষ্ঠ নেই তার জীবণে। চাতালে কাজ করতে করতে পার করেছেন ৩০টি বছর। দারিদ্রতার সংসারে বড় হয়ে কখনও পরের জমিতে কামলা দেওয়া, কখনও মানুষের বাড়ীতে কাজ করে পার হয়েছে জীবণের বাকীটা সময়। বসবাস করেন খালপাড়ের ঝুপড়ি ঘরে। একমাত্র সঙ্গী স্ত্রী নুরুন্নাহার । সেও এখন নানা অসুখে প্রায় অচল। তারপরও অভাব ঘোচাতে কাজ করতে হয় পরের বাড়ীতে।
পুরো নাম শাহজাহান হাওলাদার। বর্তমান বয়স ৮০ বছর। বসবাস ঝিনাইদহ জেলার ভারতীয় সীমান্তের মহেশপুর উপজেলার ১১নং মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের কাঠগড়া বাওড়ের খালপাড়ে তালপাতা ও পলিথিনের ছাউনিতে কাটিয়ে দিলেন ৩০টি বছর। জীবণ মানে না পাওয়া, কঠিন অর্থাভাব ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যই একমাত্র সঙ্গী তার। একমাত্র ছেলে পিতা মাতাকে ছেড়ে আলাদা বেশ ভালই আছে।
বৃদ্ধ শাহজাহান হাওলাদার জানান, বাড়ী তার সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায়। সেখান থেকে চাতাল শ্রমিক হিসাবে চলে আসেন ভাটপাড়ায়। আর ফিরে যাওয়া হয়নি। কিন্তু জীবণে কী পেলেন ও কী হারালেন এ হিসাব তিনি কষতে চান না।
তিনি অভিমান করে জানান, সবাই তো ঘর পায় তবে সে ঘর আর তার কপালে নেই। কতবার চেয়ারম্যান মেম্বারদের বলেছি ঘর পাইনি।
স্ত্রী নুরুন্নাহার বলেন, সামান্য বাতাসে নড়বড় করে তাদের ঘর। অন্যের দেওয়া সহযোগীতা আর বাড়ি বাড়ি কাজ করে যা পায় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা গলিয়ে গড়িয়ে পড়ে পানি।
প্রতিবেশিরা জানান, তারা অসহায় মানুষ। আপদ বিপদে আমরা সাহায্য সহযোগীতা করি।
৭নং মান্দারবাড়ীয়া ভাটপাড়া ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য শাহিনুর রহমান জানান, শাহজাহান সরকারী ঘর পাবার যোগ্য।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুল করিম জানান, আমরা এমন লোকদের খুজছি। ঘরের জন্য তালিকা চলছে। আমরা তাকে ঘর দেবার চেষ্টা করবো।