ঝিনাইদহে শর্টসার্কিটে যুবকের স্বপ্নপুড়ে ছাই ।। ২০ লাখ টাকার ক্ষতি
ঝিনাইদহ চোখ-
হঠৎ বৈদু্যতিক শর্টসার্কিটের আগুনে পুড়ে ভষ্মিভুত হয়ে গেছে কারখানার ভারি মেশিনসহ সকল ধরনের ফার্নিচার। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারী) দিবাগত রাতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী বাজারের বিল্লাল হোসেনের ভাই ভাই ফার্নিচার কারখানায় আগুনে পুড়ে সবকিছু ভস্ম হয়ে গেছে। ফার্নিচার তৈরীর মেশিনসহ ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেন জানান তিনি।
স্থাণীয়দের থেকে জানা যায়, রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বিল্লালের ফার্নিচার কারখানার দিক থেকে বিকট শব্দ শোনা যায়। সবাই এগিয়ে দেখে কারখানার ভিতর থেকে ধোয়া বের হচ্ছে । এলাকাবাসি চেষ্টা করে বাইরের কিছু ফার্নিচার আগুনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। কারখানার ভিতর আগুনের তিব্রতা ব্যাপক থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেনি । পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে কারখার ভিতরে আগুন নিয়ন্ত্রে আনেন।
বিল্লালেরর বাবা মুন্নাফ হোসেন জানান, তাদের বাড়িতে ৩শতক জমি ছাড়া আর কিছুই নাই। ছেলে বিল্লাল হোসেন ছোট থেকে বিভিন্ন কারখানায় ফার্নিচার তৈরীর কাজ শিখেছেন। এরপর দুই বছর হলো বিভিন্ন এজিও থেকে ঋণ নিয়ে নিজে ফার্নিচার তৈরীর কারখানা দিয়েছে। হঠাৎ কাল রাতে কারখানার সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ছেলের উপার্জনে চলতো তাদের সংসার। ছেলের একমাত্র অর্থ উপার্জনের কারখানাটিও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, এখন তারা নিঃশ্ব। এখন এনজিওর ঋণের টাকাইবা কি-করে দেবে শুধু সেই চিন্তা মাতায় ঘুরছে।
মাতা মনোয়ারা খাতুন জানান, ফার্নিচার কারখানায় কাঠের উপর খোদাই করে তৈরী করা হয় বাহারি রকমের নকশা। তৈরী করা হচ্ছিল শোবার খাট, ডেসিন-টেবিল, ডাইনিং-টেবিলসহ বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র। কাঠের উপর খোদাই করা এক-একটি নকশা যেন তার একটি স্বপ্ন ছিল।
ভাই ভাই ফার্নিচারের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, তিনি পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ফার্নিচার ব্যবসা শুরু করেন। কারখানা থেকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ফার্নিচার তৈরী করতেন। ভালো ভাবেই তার ব্যবসাটা পরিচালনা করে আসছিলেন। হঠাৎ রাতে আগুনে কারখানার সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন তিনি নিঃশ্ব, তার কারখানায় ১০ লাখ টাকার ফার্নিচার তৈরীর মেশিন ও ১০ লক্ষ টাকার কাঠ ও ফার্নিচার ছিলো।
কাতলামারী পুলিশ ক্যাম্পের এএস আই জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। কারখানায় মেশিন সহ ১৬ লক্ষ টাকার ফার্ণিচারের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আনুমানিক ধারণা করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোঃ সুমন আলী বলেন, বৈদ্যুতিক শট-সার্কিটের কারণে এই কারখানায় আগুনটা লেগেছে। কারখানার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কি পরিমাণ হতে পারে সেটা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।