হরিনাকুন্ডু

ঝিনাইদহে হোম, সুইট হোম

বুনো মাছির কামড় আর উৎপাতের ভয়ে মানুষ যখন তটস্থ তখন গ্রামের কৃষক মনিরুদ্দীন কাজীর বাড়ির সদস্যরা একটি নয় দুটি নয় ২৫টি মৌমাছির চাক সামলাচ্ছেন বছরের পর বছর।

জানা যায়, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের মূল রাস্তার পাশেই বাড়ী প্রান্তিক কৃষক মনিরুদ্দীন কাজীর। দুইতলা বাড়ির চারিপাশ জুড়ে মৌচাক আর মৌচাক। একে একে ২৫টি মৌচাক। প্রতি মুহুর্ত হাজার হাজার মাছির আনাগোনা। মৌমাছিগুলো আপন মনে মধু সংগ্রহ করে ফিরছে চাকে। বাড়ির মালিক বা প্রতিবেশিদের কাউকেই ক্ষতি করছে না তারা। গোটা বাড়ি জুড়েই মৌচাকের সমারাহো। ছাদের কার্ণিশ জুড়ে সারিবদ্ধ ভাবে মৌচাকগুলো সাজানো।

মনিরুদ্দীনের স্ত্রী মোমেনা খাতুন জানান, নিচতালার ঘরের ঢুকার পথেও মৌমাছিরা বসতে চায়। কিন্তু বাচ্চাদের হুল ফোটাতে পারে এমন আশংকায় আমরা বসতে দিই না। তা না হলে হয়তো গোটাবাড়িই মৌচাকে ভরে যেতো।

বাড়ির গৃহবধু রেবেকা খাতুন জানান, তাদের বাড়ির এই মৌচাক দেখতে পথচারীরা ভীড় করে। এতে তারা বেশ আনন্দিতও হন।

মনিরুদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ জানান, মধুর চাক ভাঙ্গতে অনেক মধু ব্যবসায়ীরা আসেন। কিন্তু তারা দাম না নিয়ে চাক ভেঙ্গে মধুর অর্ধেক ভাগ দিয়ে যান। তবে সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও মৌমাছিদের জায়গা দিতে পারলে ব্যবসায়ীক ভাবে সফল হতেন কৃষক মনিরুদ্দীন। মনে হচ্ছে উৎপাত না থাকায় হয়তো মৌমাছিরা নিরাপদ ভেবেই ওই বাড়িতে চাক বসিয়ে বংশ বিস্তার করছে।

কৃষক মনিরুদ্দীন কাজী জানান, দুইতলা বিশিষ্ট বাড়িটি দেখলে মনে হবে কোন নিপুন হাতের কারুকার্য্য। তার বাড়িটি তৈরী করার পর থেকে একটি দুইটি করে মৌচাক বসতে থাকে। গত ৫ বছর ধরে ২২ থেকে ২৫টি মধুর চাকে মৌমাছিগুলো বসবাস করছে। বৈশাখ ও জৌষ্ঠের খরতাপে ফুল ও পানি স্বল্পতার কারণে ৮ থেকে ১০টি মৌচাক থাকে। আষাড় ও শ্রাবন মাস আসলে আবারো ২০ এর অধিক মৌচাকের সংখ্যা বেড়ে যায়। বলা যায় মৌমাছির পচ্ছন্দের বাড়ি এটি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button