টপ লিডশৈলকুপা

বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ঝিনাইদহের চ্যাম্পিয়ন কন্যারা

নেই মাঠ, নেই ভাল অবকাঠামো, নেই ক্রিড়া সামগ্রি, নেই প্রশিক্ষণ, তারপরও দেশ বিজয়ী।  টুর্ণামেন্টে সর্বোচ্চ গোলের পুরষ্কার সোনার বুট আর শিরোপা আর কি চাই এই নারী শিশুদের কাছ থেকে? বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্টে ঢাকা কে হারিয়ে শিরোপা অর্জনকারী দেশের প্রত্যন্তপল্লীর সেই অমসৃণ হীরা দোহারো কন্যারা ।

দোহারো মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও দলের অধিনায়ক তহমিনা খাতুন উন্নতি জানায়, কে জানত ঝিনাইদহের শৈলকুপার অজপাড়া গাঁ দোহারো স্কুলের নারী শিশুরা ফুটবলে হবে দেশ সেরা, ছিনিয়ে আনতে পারবে শিরোপা ? কেউ জানুক বা না জানুক অদম্য এই নারী শিশুরা তার জন্যে বসে থাকেনি । ইচ্ছা শক্তির উপর ভর করেই শুরু করেছিল এই টুর্নামেন্টের , সেটাও ১১ মাস আগের কথা। লড়াই শুরু করেছিল ৬৫ হাজার স্কুলের মধ্যে । শুরুতেই চমক দেখাতে থাকে, ইউনিয়ন, থানা, জেলা অত:পর অপরাজিত ভাবে খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়। গল্পটা আর থেমে থাকেনি।

গোলকিপার বৃষ্টি জানায়, খেলার মাঠ আর উন্নত খেলার সরঞ্জামাদি ভালো হলে আগামীতে আমরা আরো ভালো কিছু করতে পারবো।

কোচ রবিউল ইসলাম স্যার জানালেন, ২০১৫ সালে তৃতীয় স্থান অধিকারী দোহারো দলটি খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জনের পথে পা বাড়াতে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হয়। বরিশাল বিভাগ কে ৮-০ গোলে পরাজিত করে উঠে যায় সেমিতে, সেখানে রংপুর বিভাগ কে ৪-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে । এ যেন একের পর এক স্বপ্ন ছোয়ার গল্প । এরপর ২৮মার্চ ফাইনালে মুখোমুখি হয় রাজধানী ঢাকা বিভাগের । খেলার প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে খুলনার প্রতিনিধিত্বকারী দোহারো কন্যারা । কিন্তু তারা দমে যাওয়ার পাত্র নয় । দ্বিতিয়ার্ধে ১-১ গোলে সমতা আনতে সক্ষম হয় । এভাবেই শেষ ফাইনাল খেলার নির্ধারিত সময় । তারপর টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের ব্যাবধানে ঢাকা কে হারিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে আনে দোহারো মেয়েরা।

তিনি আরও দাবী করেন, খেলার মাঠ সংস্কার, শিক্ষক স্বল্পতা কাটিয়ে উঠতে সহযোগীতা চান সবার। মেধাবী খেলোয়াড় আরো রয়েছে, পরিচর্যা করলে যারা আগামীতে জাতীয় দলে ভ’মিকা রাখতে পারবে।

উন্নতির মা-হামিদা, বাবা-দাউদ হোসেন জানান, এমন স্বপ্ন জয়ের গল্পে আনন্দে আত্মহারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো । তবে শৈলকুপার এই দোহারো গ্রামের মেয়েরা হতদরিদ্রতার কারনেও পায় না তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা। তাই পরিবাবরের দাবি সরকার যেন তাদের প্রতি দৃষ্টি দেন।

শৈলক’পা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসমান গণি জানান, তিনি সকল প্রকারের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button