ঝিনাইদহের চারটি আসনে বিএনপির প্রার্থী আটজন
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহের চারটি আসনে বিএনপির আট প্রার্থীর মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রতি আসনে দুজনকে প্রার্থী করা হয়েছে। সোমবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠি মনোনীত প্রার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-১ (জাতীয় সংসদের ৮১ নম্বর) আসন। নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, এই আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৪২ জন। ঝিনাইদহ-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আসাদুজ্জামান আসাদ ও বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দখলে থাকা এ আসনটি ২০০১ সালের নির্বাচনে হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর থেকে আসনটি দখলে নিতে পারেনি বিএনপি। এই আসনে শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওহাবও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৩টি, হরিণাকুন্ডু উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-২ (জাতীয় সংসদের ৮২) আসন। জেলার চারটি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ আসন এটি। ঝিনাইদহ-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ এবং জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সভাপতি এসএম মশিউর রহমান।
এই আসনে দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশী ছিলেন চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাভলু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল আজাদ পান্নু ও ঝিনাইদহ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস (ছোট মজিদ)। এই আসনটিতে বরাবরই বিএনপির রয়েছে বেশ শক্ত অবস্থান। আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনে সব সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে থাকে।
কোটচাঁদপুর উপজেলার পাঁচটি, মহেশপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-৩ (জাতীয় সংসদের ৮৩) আসন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার ৫৫৮ জন। ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর উপজেলা) আসনে সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাষ্টারের ছেলে মেহেদী হাসান রনি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান মনোনয়ন পেয়েছেন।
এ আসনে বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক আমিরুজ্জামান খাঁন শিমুল, মহেশপুর উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা লতিফুর রহমান চৌধুরী, মহেশপুর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুর রহমান, মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিরুল ইসলাম খাঁন চুন্নু, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, কোটচাঁদপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, কোটচাঁদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সালাহউদ্দীন বুলবুল সিডল, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান একরামুল হক, কোটচাঁদপুর উপজেলা যুবদল নেতা হায়দার আলী, মহেশপুর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি দবির হোসন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তারেকুজ্জামান তারেক, মহেশপুর বাশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী, মহেশপুর পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শাহ জামান মোহন ও মহেশপুর উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মাহফুজুল হক বাবুও বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি, সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ-৪ (জাতীয় সংসদের ৮৪) আসন। এই আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৪৯ হাজার ২২ জন। ঝিনাইদহ-৪ (সদরের আংশিক-কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সম্পাদক সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টু।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির এক অংশের আহ্বায়ক পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহবুবার রহমান, যুগ্মআহবায়ক হামিদুর রহমান হামিদ ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা হারুন অর রশিদ মোল্লাও এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছাড়া প্রায় প্রতিটি আসনেই দুই জনকে মনোনয়নের চিঠি দিচ্ছে বিএনপি। সোমবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কোনো কারণে একজনের প্রার্থীতা বাতিল হয়ে গেলে অন্যজন যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান সে লক্ষ্যেই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
জানা যায়, যেসব আসনে সিনিয়র নেতারা নির্বাচন করবেন, সেখানে একজনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। বাকি আসনগুলোতে দুইজন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে একজনকে প্রত্যাহার করা হবে।