![](https://i0.wp.com/jhc24.com/wp-content/uploads/2018/12/1543902717494-1.jpg?resize=780%2C470&ssl=1)
যৌতুকের টাকা না পেয়ে গৃহবধূর ওপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে স্বামী সাব্বির হোসেন। টাকার জন্য স্ত্রী শারমিন আক্তার সাথীর গলায় ছুরি চালিয়ে জখম করেছে। দিনের পর দিন জলন্ত সিগারেট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ সাথীর বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আনসার ব্যাটলিয়ন সদস্য মেহেদী হাসান শওকতের মেয়ে।
বুধবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এসে সাথী তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পাষণ্ড স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের ক্ষত স্থানগুলো দেখান। এ সময় তিনি আদালতে দায়ের করা ৩টি মামলার তথ্য সাংবাদিকদের দেন।
সাথী জানান, একটি মামলায় সাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছেন। এছাড়া পারিবারিক ও নারী শিশু নির্যাতন আদালতের দুটি মামলা তদন্তনাধীন রয়েছে। কিন্তু সাব্বির আর্মস এপিবিএনর-এর কনস্টেবল হওয়ায় আদালতের আদেশ পুলিশ তামিল করছে না। সাব্বির এখন ঢাকার উত্তরার পুর্ব থানায় ১ আর্মস এপিবিএন (কনস্টেবল নং ১৪৫৪) হিসেবে বহাল তবিয়তে কর্মরত।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ১৬ মে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গোবরা গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেনের সাথে শারমিন আক্তার সাথীর ৫ লাখ টাকার দেন মোহরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর সাব্বিরকে দুই লাখ টাকার যৌতুক প্রদান করেন সাথীর পিতা মেহেদী হাসান শওকত। এরপর তিনি বিভিন্ন সময় যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করতো। দিন যত যায় ততই নির্যাতনে মাত্রা বাড়তে থাকে সাথীর উপর। জলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকায় ক্ষত বিক্ষত হয় সাথীর শরীর।
এতো কিছুর পরও সাথী সংসার করার জন্য স্বামীর সাথে ঢাকার উত্তরার দিক্ষনখান আমতলা শাহী মসজিদের পাশে ভাড়া বাসায় চলে যান। সেখানে নিয়ে বাসায় একা পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হাত ও গলায় ছুরি চালায় সাব্বির। রক্তাক্ত জখম হয় সাথী।
পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফুল ইসলামের কাছে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নিকটস্থ থানায় এ বিষয়ে গত ৭ নভেম্বর একটি জিডি করেন সাথী। জিডি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসআই আসমাউল হুসনাকে নির্দেশ দেন ওসি। কিন্তু সাব্বিরের প্রভাবে সব কিছুই থেকে গেছে।
নির্যাতিত গৃহবধূ স্বামীর ক্ষত চিহ্ন নিয়ে শৈলকুপা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে পড়ে আছে। আদালতে মামলা করেও তিনি প্রতিকার পাচ্ছেন না। উপরন্ত পাষণ্ড স্বামী সাব্বিরের জীবন নাশের হুমকিতে সর্বক্ষণ তটস্থ থাকছে সাথীর পরিবার।