নির্বাচন ও রাজনীতি

শিক্ষিকার মেয়ে দেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী

ঝিনাইদহের চোখঃ

মা রহিমা ওয়াদুদ একজন মানুষ গড়ার কারিগর। জ্ঞানের আলো বিলিয়েছেন দীর্ঘসময়। সাদামাটা তাঁর জীবন-যাপন। তাঁর মধ্যে কখনোই পরশ্রীকাতরতা নেই। কারো কিছু দেখলে পাওয়ার কোন লোভও নেই। অন্যের সফলতা দেখে ঈর্ষান্বিত হন না, বরং খুশি হন। সেই শিক্ষিকার মেয়েই আজ দেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী। বলছিলাম ডা. দীপু মনির কথা। দীপু মনির এই সফলতার গল্প শোনাচ্ছেন রিফাত কান্তি সেন-

বেগম রোকেয়ার পথে: নারী জাগরণের অগ্রদ্রুত ছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। নারী শিক্ষার প্রসারে তিনি অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। বেগম রোকেয়ার দেশে প্রথম কোন নারী হলেন শিক্ষামন্ত্রী। আর সে দায়িত্বটা পেলেন চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি ডা. দীপু মনিকে।

ইতিহাসের নতুন অধ্যায়: স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর দেশ একজন নারীকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে পাচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশের ইতিহাসে যুক্ত হচ্ছে নতুন এক অধ্যায়। নবম জাতীয় সংসদে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দায়িত্ব পালনে ছিলেন সফল।

নারীর ক্ষমতায়ন: ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে নারীর ক্ষমতায়ন শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নারীরা এগিয়ে চলছে দুর্বার গতিতে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ডা. দীপু মনি। একাধারে তিনি প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

চাঁদপুরবাসীর প্রিয়জন: তিনি মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর সদর, হাইমচরের বিশাল জনগোষ্ঠীকে রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোর মানুষ আলোর সন্ধান পেয়েছে। সাধারণের মত জীবন-যাপন করে আপন করে নিয়েছেন সবাইকে। কোন বাধাই তাকে আটকাতে পারেনি। তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাঁদপুরবাসী বেছে নিলেন দীপু মনিকে।

অন্য অর্জন: তিনি ছিলেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। দলের অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে সারাদেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম কুড়িয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে প্রিয় নেত্রী হতে পেরেছেন।

নির্বাচনী প্রচারণা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব ছিলেন তিনি। উন্নয়নের চিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন ভিডিও বার্তায়। তরুণরা সে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে সাদরে গ্রহণ করেছে। প্রচারণার মাধ্যমে তার দশ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়কার উন্নয়নগুলোকে বেশ গুরুত্বের সাথে তুলে ধরতে পেরেছেন। মানুষের কাছে বিরামহীন ছুটে গিয়েছেন।

তিনি সবার আপা: সবারই তিনি ‘আপা’ হিসেবে পরিচিত। ‘দীপু আপা’ নামেই বেশি পরিচিত তিনি। তাই তো সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে নিজের ভোট দিয়েছেন। গড়েছেন ইতিহাস। তার সেই ছবি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে।

একনজরে দীপু মনি: ষাটের দশকের মাঝামাঝি ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ এবং শিক্ষিকা রহিমা ওয়াদুদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয়া শিশুটিই আজকের দীপু মনি। তৃতীয়বারের মতো তিনি চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button