কী হবে সৈয়দ আশরাফের এতিম কন্যার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা
ঝিনাইদহের চোখঃ
যুক্তরাজ্যে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। শিক্ষা-দীক্ষা আর কর্মস্থলও সেখানেই। বাবার মৃত্যু তাকে এক টানে সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে নিয়ে এসেছে বঙ্গোপসাগর তীরে। বাংলাদেশে এসে বাবার জানাজা ও চিরনিদ্রা দেখেছেন নীরব ও অশ্রুসজল চোখে। তখনই লাখো মানুষের নজর কাড়েন সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রয়াত জননেতার আদরের মেয়ে ও জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের নাতনি সৈয়দা রিমা ইসলাম। কিশোরগঞ্জের রাজনৈতিক মহল আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সৈয়দ আশরাফের একমাত্র এতিম কন্যা। কী হবে তার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা? জানতে উৎসুক সবাই।
কিছুদিন আগে মা সৈয়দা শিলা ইসলামকে হারিয়েছেন, এবার বাবাকেও হারালেন মেয়ে রিমা। মা-বাবার মৃত্যুর পর শেকড়ের কাছে ফিরে আসা ছাড়া তার সামনে অন্য কোনও গত্যন্তর নেই। যে জনতার সমুদ্রসমান উচ্ছ্বাস সৈয়দ আশরাফকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে, সেই সমুদ্রেই নোঙর ফেলতে হবে তাকে শেষ ঠিকানার সন্ধানে। এমনটাই মনে করেন কিশোরগঞ্জের সৈয়দ পরিবার সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনেরা।
অনেকে মনে করেন, সৈয়দ আশরাফ চাইতেন না, তার একমাত্র সন্তান রাজনীতিতে আসুক। এ কারণেই তিনি কন্যাকে দেশে আনেননি। মেয়েকে স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে জীবন গঠন ও পেশা বেছে নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন তিনি। রাজনীতির সংস্পর্শে তাকে রাখার চেষ্টা করেন নি কখনও।
তবে এই বাস্তবতা এখন আর নেই আশরাফ তনয়ার সামনে।
সৈয়দ আশরাফের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রিমা এখনও শোকাভিভূত। আপাতত তিনি পিতৃকুলের আত্মীয়দের সঙ্গে আছেন। বাংলাদেশে তার মাতৃকুলের কেউ নেই। পিতার মৃত্যু-পরবর্তী দায়-দায়িত্ব পালনেই ব্যস্ত আছেন তিনি। তার ভবিষ্যত কর্মপন্থা সম্পর্কে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, উচ্চশিক্ষিত, মেধাবী ও সুদক্ষ তরুণী রিমা জন্মগতভাবেই ধীর-স্থির। তিনি কি লন্ডনেই ফিরে যাবেন, নাকি বাংলাদেশে লক্ষ-কোটি সমর্থকদের দিকে তাকিয়ে বাবা-দাদার রাজনৈতিক উত্তরসূরি হবেন, তা এখনও জানাননি। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার রয়েছে। তিনি পরিস্থিতি ও বাস্তব অবস্থা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। কাছের লোকজনের সঙ্গে নানা বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, কথাবার্তা বলছেন।
পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র জানায়, সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুর পর পিতৃমাতৃহীন রিমার দায়িত্ব শুধু পরিবারেরই নয়। পুরো দেশের মানুষই তার পাশে আছে। তারপরও আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেতা সৈয়দ আশরাফের অবর্তমানে আওয়ামী লীগ প্রধান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন তার মুরুব্বী ও অভিভাবক। রিমা নিশ্চয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন এবং সঠিক পদক্ষেপ নেবেন।