অন্যান্য

আপনি কি ‘স্যাড’ সমস্যায় আক্রান্ত?

ঝিনাইদহের চোখঃ

খুব বিষণ্ণ বোধ করছেন গত কিছুদিন যাবত?

কিছুই ভালো লাগছে না, অকারণে মন খারাপ হচ্ছে, বিরক্তিবোধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, কারণ ছাড়াই হয় কান্না পাচ্ছে অথবা রাগ হচ্ছে। হুট করেই যদি মানসিক অবস্থার এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তবে বিচলিত হবার কিছু নেই। ‘স্যাড’ সমস্যয় আক্রান্ত হওয়ার ফলে মানসিক এই বিষণ্ণতা দেখা দিয়েছে।
কী এই ‘স্যাড’?

ইংলিশ শব্দ স্যাড (Sad) এর অর্থ মন খারাপ। তবে এখানে স্যাড একটি মানসিক সমস্যার সংক্ষিপ্ত রূপে প্রকাশ করা হয়েছে। সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (Seasonal Affective Disorder – SAD) খুবই কমন একটি সমস্যা। যাকে উইন্টার ব্লুজও বলা হয়ে থাকে। আবহাওয়া বদলের সঙ্গে মনে ও মুডের পরিবর্তনের ফলে এই সমস্যাটি দেখা দেয়। বয়স ও লিঙ্গ ভেদে যে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন।
স্যাড এর লক্ষণগুলো কী?

এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির মাঝে যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পায় তা তুলে ধরা হলো-

১. প্রায় প্রতিদিন বিষণ্ণ বোধ করা।

২. প্রিয় কাজের প্রতিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।

৩. এনার্জি একেবারে কমে যাওয়া।

৪. ঘুমের সাইকেলে সমস্যা দেখা দেওয়া।

৫. ক্ষুধা ও ওজনে তারতম্য দেখা দেওয়া।

৬. মনোযোগ কমে যাওয়া।

৭. অকারণে নিজের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করা।

৮. প্রায়শ মরে যাওয়া ও আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘোরা।

স্যাড দেখা দেবার কারণ কী?

আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে দিনের সময়কাল কমে আসে। দিনের আলো কমে যাওয়ার ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ সাইকেলের স্বাভাবিক ক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। যা থেকে এই বিষণ্ণতা তৈরি হয়। অন্যদিকে রোদের আলো কম পাবার ফলে সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণের মাত্রাও কমে যায়। যা মুড পরিবর্তনের জন্য দায়ী।
কীভাবে স্যাড সমস্যাকে কমানো যাবে?

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার অ্যাসোসিয়েশন সাময়িক এই মানসিক সমস্যা কাটানোর জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী টিপস জানিয়েছে। যা স্যাড এর প্রভাবকে কমাতে বেশ কার্যকরি।

সবসময় একটিভ থাকতে হবে

নিজেকে সবসময় কাজের মাঝে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। কাজ করতে ইচ্ছা না করলেও, জোর করে নিজেকে ব্যস্ত না রাখলে বিষণ্ণতা বৃদ্ধি পাবে।

বাইরে বের হতে হবে

সারাদিন ঘরের মাঝে ঘাপটি মেরে থাকলে মন খারাপ হবার সম্ভবনা বেড়ে যাবে অনেকটা। ছোটখাটো কোন কাজে অথবা কিছুটা হাঁটার জন্য হলেও বাসা থেকে বের হতে হবে। বাইরের আলো-বাতাস ও প্রাণচাঞ্চল্যে মন খারাপ ভাব কেটে যায়।

নিজেকে উষ্ণ রাখতে হবে

যেহেতু শীতকালে এই সমস্যাটি দেখা দেয়, অবশ্যই নিজেকে গরম কাপড়ে উষ্ণ রাখতে হবে। উষ্ণতা উইন্টার ব্লুজ কাটাতে কার্যকরি। সঙ্গে গরম পানীয় ও খাবার খাওয়ার প্রতিও যত্নশীল হতে হবে।

আলো থাকুক চারপাশে

শীতকালে শুধু যে দিনের সময়কাল কমে যায় তাই নয়, সূর্যের দেখা পাওয়াও কষ্টকর হয়ে ওঠে। তাই চেষ্টা করতে হবে বাসা ও ঘর যতটা সম্ভব আলোকিত করে রাখার।

উইন্টার ব্লুজ বা স্যাড খুবই সাময়িক একটি মানসিক সমস্যা। আবহাওয়া পরিবর্তে এই সমস্যা দেখা দেয় ও সমস্যাটি কেটেও যায়। তবে যদি মানসিক বিষণ্ণতা দীর্ঘ সময় একইরকম থাকে ও আবহাওয়ার পরিবর্তনেও কোন পরিবর্তন না আসে, তবে অবশ্যই মানসিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button