টপ লিডশৈলকুপা

ঝিনাইদহের শৈলকুপার গড়াই নদীঅংশে বালি তোলার উৎসব

সুলতান আল একরাম, ঝিনাইদহের চোখঃ

প্রশাসনের নাকে ডগায় ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গড়াই নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। শীত শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু ও মাটি কেটে নদীর চিহ্ন নিশ্চহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে। বালু ও মাটি উত্তোলনের এই মহৎসব দেখে মনে হচ্ছে জেলায় কোন প্রশাসন নেই। নেই কারো জবাবদিহীতা। গড়াই নদীতে ভেকু ও ড্রেজার ম্যাশিন বসিয়ে ২৪ ঘন্টা দেদারছে নদীর বুক থেকে বালু আর মাটি কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এতে করে ফসলি জমি, বসতবাড়ী ও পাকা রাস্তা হুমকির মুখে পড়েছে। টানা বৃষ্টিতে ও নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীর পাড়ের জমি ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে শৈলকুপা উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, শেখপাড়া, লাঙ্গলবাধ, আবাইপুর, মাজদিয়া, সুবিদ্দা ও গোবিন্দপুর এলাকায় গড়াই নদী থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু ও মাটি অবৈধ উপায়ে কাটা হচ্ছে। বালু ও মাটি বোঝায় শত শত ট্রাক চলাচলের কারণে শৈলকুপার রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে রাস্তার ধুলাবালিতে অতিষ্ট হচ্ছে সাধারণ বসতি ও বাজারের দোকানিরা। শৈলকুপার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন ও তার ভাই ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিন ভেকু এবং ড্রেজার লাগিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছেন।

সুবিদ্দা গোবিন্দপুর গড়াই নদীর চর থেকে ইউপি সদস্য খেলাফত প্রতিদিন শত শত ট্রাক বালু অবৈধভাবে বিক্রি করছেন। মাঝদিয়া গড়াই নদীর চর থেকে মিলন হোসেন মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে ড্রেজার, ভেকু মেশিন ও শ্রমিক দিয়ে প্রতিদিন বালু তুলে বিক্রি করছেন। বোয়ালিয়া ও শেখপাড়া এলাকায় ভেকু মেশিন ও শ্রমিক দিয়ে নদীর বুক থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে মুকুল নামের এক ব্যক্তি।

এছাড়াও উপজেলার লাঙ্গলবাধ ও আবাইপুরে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর বুক থেকে প্রতিনিয়তই বালু উত্তোলন করছে। ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ফিটনেস বিহীন ছোট বড় নানা প্রকার যানবাহনে ইটভাটাসহ নদীর এ বালি ও ফসলী জমির মাটি কেটে বিভিন্ন যায়গায় বিক্রি করা হলেও শৈলকুপার প্রশাসন নির্বাকার।

মালিকরা অভিযোগ করেন, জমির চারিদিক থেকে ভূমি খেকোরা মাটি কেটে নেওয়ায় প্রতিবছর তাদের নিজ নিজ জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে।

বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, প্রতিটি বড় ট্রাক ৫শ টাকা, ইঞ্জিন চালিত ট্রাক্টর গাড়ী ৪শ টাকা, লাটা হাম্বা ৩৫০ টাকা ও অন্যান্য সকল পরিবহন ২২০ টাকা হারে নিয়মিত বালি বিক্রয় করা হয়।

এদিকে নদীর বুক থেকে এ ভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার ফলে কুমার ও গড়াই নদীসহ অন্যান্য নদীতে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে শৈলকুপার ইউএনও উসমান গণি জানান, শৈলকুপার বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের ঘটনায় আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা ও বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত গাড়ী এবং ড্রেজার মেশিন বিনষ্ট করেছি।

তিনি বলেন, নদী কাটার মতো পরিবেশন বিপন্ন হওয়ার মতো কাজ কেও করলে কাউকে আমরা ছাড় দেব না। আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button