
মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ
জেলার ৬টি উপজেলার অপরিকল্পিতভাবে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাস্তার কোল ঘেষে গড়ে তোলা ইট ভাটার কারনে বর্ষায় কাঁদামাটি আর গীষ্মে ধুলিকনায় নাস্তা নাবুদ হতে হয় পথচারিদের। বিপর্যন্ত হয়ে উঠছে জনজীবন। আর ধুলাজনিক রোগব্যাধির প্রকোপ অস্বাভাবিকভাবে দিনদিন বেড়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও অবকাঠামো এবং নির্মান কাজে ইট একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। তবে সব কিছুর মুলে রয়েছে নিজে সুস্থ্য থাকা এবং অপরকে সুস্থ্য রাখা। এ থেকে প্রতিকার পেতে ইটভাটা মালিক ও প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগিরা।
অভিযোগে জানা যায়, ইট প্রস্তুত এবং ভাটা স্থাপনা (নিয়ন্ত্রন) আইন ২০১৩-এর ৮ ধারা অনুযায়ি, লোকালয় ও কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরি দন্ডনিয় অপরাধ। কিন্তু কর্মকর্তাদের উদাসিনতা এবং ইট ভাটা মালিকেরা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালি ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আইনকে অমান্য করে ইটভাটা গড়ে তোলেন। যে কারনে কোন সময় অভিযোগ উঠলেও বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার অধিকাংশ ইটভাটাগুলোই গড়ে উঠেছে আবাদযোগ্য জমি এবং সড়ক ও মহাসড়কের কোল ঘেষে। ভাটাগুলোতে ইট তৈরির জন্য কেটে আনা মাটি প্রতিদিন রাস্তার উপর পড়ছে। আর এসব কাদামাটি পড়ে আলগা ধুলায় জন্ম হচ্ছে। আবার শীতের শীতেও বৃষ্টিতেই রাস্তার উপর পিচ্ছিল কাদার সৃষ্টি হয়ে দূর্ঘটনা ঘটছে।
যদিও কাদা থেকে রক্ষা পেতে ইটভাটা মালিকেরা ইটের গুড়া ছিটিয়ে সাময়িক সমাধান করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরবর্তিতে রোদে শুকিয়ে গাড়ি চলাচল করা কারনে ইটের গুড়া আর কাদামাটি মিলে ধুলার পরিমান বেড়ে যায়। তাই স্বস্থ্য সম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে অচিরেই বায়ু দুষনের উৎসগুলো বন্ধ তুলছে সচেতনমহল।
মহেশপুরের গুড়দহের আব্দুর রাজ্জাক জানান, পানি আর রাস্তা তৈরিতে খোড়াখুড়ির সময় শহরের পরিবেশ যেমন দূষিত হয়, ঠিক তেমনি রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা ইটভাটার ভারি ধুলিকনায় গ্রামাঞ্চলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রে যেন বায়ু দুষিত করার অঘোষিত প্রতিযোগিতা চলছে। এমতাবস্থায় বায়ু দুষনের প্রতিরোধ অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে।
সদর উপজেলার চিকিৎসক বজলুর রহমান বলেন, বায়ু দুষনের কারনে অন্যান্য সময়ের চেয়ে গ্রীস্মের সময়ে বেশি পরিমানে শ^াসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়াও ধুলিবালির কারনে এজমা, শ^াসকষ্ট, এলার্জি, ফুসফুসে রোগ শরীরের লোমের গোড়ার ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে চর্ম রোগ সৃষ্টি যায়।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু তালহা বলেন, যেখানে সেখানে ইটভাটা তৈরির কারনে শুধু রোগই সৃষ্টি হচ্ছেনা। কৃষি জমিও কমে যাচ্ছে। ইটভাটার আশপাশের জমি গুলোর ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে।