ঝিনাইদহের কৃতি সন্তান এসপি কাজী আশরাফুল আজীম

ঝিনাইদহের চোখঃ
প্রশংসায় ভাসছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার। উন্নত সেবা আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যে ইতোমধ্যে শেরপুর বাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম। এবার সততা প্রতিষ্ঠাতেও ভিন্নতর স্বীকৃতি পেলেন পুলিশের ২৪ ব্যাচের এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়রা বলছেন,গত বুধবার জেলার শীর্ষ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে গণ শুনানীর আয়োজন করে দূর্নীতি দমন কমিশন। সেখানে একমাত্র জেলা পুলিশ বাদে প্রায় সকল সরকারি দফতরের সেবা ও নাগরিক সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষরা। অতিতে দেখা গেছে,সাধারণত পুলিশের সেবা নিয়েই গণশুনানীতে বেশি প্রশ্ন তুলতেন নাগরিকরা।
সেখানে শেরপুরের অভিজ্ঞতায় খোদ দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারাও অবাক। গণ শুনানীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, এটা দৃশ্যমান ইতিবাচক পরিবর্তন। পুলিশের সেবা নিয়ে জনগনের সন্তুষ্টিই আমাদের অর্জন। এই অর্জনকে যারা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ।
পেশাগত গন্ডির বাইরে দেশের জন্যে নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ঢাকা জেলাতেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালনকালে প্রশংসা কুড়ান এই পুলিশ কর্মকর্তা। জেলা পুলিশের মধ্যে অনন্য পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবেও নিজের কাজের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পান কাজী আশরাফুল আজীম।
এ ছাড়াও শেরপুর জেলায় ৩০ লাখ শহীদ স্মরণে ৩০ লাখ গাছের চারা লাগিয়েও আলোচনায় আসেন তিনি। পাশাপাশি অসুস্থ্য ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের পাশে ব্যক্তিগত পর্যায়ে দাঁড়িয়ে নিজেকেও নিয়ে গেছেন ফোর্সের হৃদয়ের অনন্য আসনে। এ ছাড়াও নিজের সততা ও সেবায় অর্জন করেছেন রেঞ্জ সেরা পুলিশ সুপারের মর্যাদাও।
আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হই এই স্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে সরকারি দফতরে সেবা ও সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যাদি শ্রবণ ও নিস্পত্তি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজন করে গণশুনানির।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদের অডিটরিয়ামে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বক্তব্য রাখেন দুদকের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক আখতার হোসেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ন চন্দ্র হোড়।
গণশুনানিতে ভূমি অফিস, হিসাব রক্ষণ অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, জরিপ অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, জেলা সদর হাসপাতালসহ বেশ কটি সরকারি প্রতিষ্ঠান শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। এতে জেলার খাল বিল দখল হয়ে যাওয়া, জমি খারিজ করতে হয়রানী, জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় হয়রানী, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গ্রাহক হয়রানী ও
দালালদের দৌরাত্ম, শিক্ষা অফিসে ঘুষ দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং অভিযোগগুলোর বিষয়ে তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দিয়ে নিস্পত্তি করা হয়।
সেখানে থানা পুলিশ থেকে শুরু করে জেলা পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা অংশ নিলেও কেউ পুলিশের সেবা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলেন নি। বরং অনেকেই বলেছেন,পুলিশ সুপার হিসেবে কাজী আশরাফুল আজীম দায়িত্ব গ্রহণের পর সেবার মান বেড়েছে। বদলেছে পুলিশের কার্যক্রমের ধারা।
‘আগের চাইতে পুলিশ এখন অনেক জনমুখী। সেবার মান-ও উন্নত। দ্রুত সেবা গ্রহণ,মামলার তদন্তে পুলিশের আন্তরিকতাও এখান অনেকে বিস্তৃত’- বলছিলেন,জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট নারায়ন চন্দ্র হোড়। যোগাযোগ করা হলে শেরপুর জেলা পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান,পুলিশ জনগনের বন্ধু। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ পুলিশ আজ সেবা ও মানে অনেক পরিণত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন,সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি দায়িত্ব নেবার পর থেকেই পুলিশকে আরো জনকল্যানে নিয়োজিত করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংকে জোরদার করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত ওপেন ডে হাউজ আয়োজন করে পুলিশ সম্পর্কে সেবাগ্রহিতাদের বিভিন্ন পরামর্শ এমনকি কোন অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিকভাবে তা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে।
পুলিশের পেশাগত মান বাড়ানোর পাশাপাশি জেলায় এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে কাউন্সেলিং করা হয়েছে। আমরা বলেছি,পুলিশের সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। সেবার জন্যে সবাইকে আরো নিবেদিত প্রাণ হতে হবে। যার বহি:প্রকাশ আমার জেলা পুলিশ একটি টিম হয়ে কাজ করছে। ফলাফল আমাদের এই অর্জন- যোগ করেন শেরপুরে জেলা পুলিশের প্রধান কাজী আশরাফুল আজীম।