নির্বাচন ও রাজনীতি

সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করলেন ফখরুল

 

ঝিনাইদহের চোখ:

দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বুঝতে হবে, আমরা অত্যন্ত কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগুচ্ছি। আশা করি, শক্তিশালী সংগঠনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’ সোমবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃর্শত মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব মামলা প্রত্যাহার এবং দলটির নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মুক্তির দাবিতে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা এখন আর বক্তব্যের মধ্যে থাকতে চাই না। কিছু কাজ করতে চাই। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করে ডাইনামিক সংগঠনে পরিণত করে দেশনেত্রীর মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি এবং আমাদের নেতাদের মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন করতে চাই। তিনি বলেন, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই, লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বড় কিছু পেতে হলে সংগ্রামের মধ্যেই পেতে হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সুচিন্তিতভাবে অত্যন্ত গুছিয়ে একদলীয় শাসনের দিকে যাওয়া শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেভাবে প্রতিরোধ করতে পারিনি। কারণ আওয়ামী লীগ সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুঃশাসনের মধ্যে নিয়ে নজিরবিহীন নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়েছে। আপনাদের বুঝতে হবে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক লড়াই সবসময় অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

তিনি বলেন, বর্তমান সময় খুব কঠিন সময়, এই সংগ্রামও খুব কঠিন। এই সংগ্রামকে হাসি খেলার মধ্য দিয়ে উত্তরণ সম্ভব নয়। আজকে আমরা যদি আন্তর্জাতিক রাজনীতির দিকে তাকাই দেখবেন সব জায়গায় কর্তৃত্ববাদ ঝুকে বসে আছে। গণতন্ত্র পিছিয়ে যাচ্ছে। যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন তারা সেভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারছেন না।

ফখরুল বলেন, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান আর ২০১৯ এক সময় নয়। এই কথাটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এটা মাথায় রেখেই আমাদের পরবর্তী রণকৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এর জন্য ভাবতে হবে, পড়তে হবে, আন্তর্জাতিক বিশ্ব সম্পর্কে জানতে হবে। আমাদের চিন্তা করতে হবে, বর্তমান পেক্ষাপটে সংগঠনকে কীভাবে আরও শক্তিশালী করা যায়। যাতে বিশ্ব রাজনীতির সঙ্গে লড়াই করতে পারি।

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া এতটা অসুস্থ যে আমি বর্ণনা করতে পারব না। আমি নিজে গিয়েছি, দেখেছি তাকে। তিনি নিজে বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, তাকে সাহায্য করতে হয়। হাঁটতে পারেন না হুইল চেয়ারে চলতে হয়। খেতে পারেন না। তার শরীর একদম ভালো নেই।’

দেশের অর্থনীতির দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পত্রিকায় বের হয়েছে দেশের একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ যিনি সরকারের একসময় উপদেষ্টা ছিলেন, তিনি বলেছেন- ব্যাংকিং খাতের চরম দুরবস্থা। দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে নিতে হলে দেশের অর্থনীতিকে ঠিক রাখতে হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান রতন, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button