টপ লিডশৈলকুপা

ঝিনাইদহে ভয়াবহ তাপপ্রবাহে আম ফেটে ঝরে পড়ছে

ঝিনাইদহের চোখঃ

গতবারের মত এবারও আমের ভালো ফলনের আশা করছেন ঝিনাইদহের আমচাষিরা। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় এবং সময়মত পরিচর্যা করায় এবার ফলন ভালো হচ্ছে বলে মনে করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তবে ইদানিংকার ভয়াবহ তাপপ্রবাহে অপরিপক্ক আম গাছেই ফাটছে, ঝরে পড়ছে মাটিতে।

চাঁদপুরের সলেমানপুরের কয়েকজন আমচাষি জানালেন, আগেকার সময়ের মত স্বচ্ছল গৃহস্থের বাড়িতে বাগান না থাকলেও সচেতনতার কারণে প্রতিটি কৃষকই এখন সুযোগমত যেখানে যেমন পারেন ফলজসহ অন্যান্য গাছ লাগাচ্ছেন। ফলে দিন দিন আম ও অন্যান্য ফল গাছের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষিপ্ত হলেও আমের ফলণ বাড়ছে প্রতি বছর। তবে এবারের অতিরিক্ত গরমে বেশকিছু ফল গাছেই ফেটে নষ্ট হয়ে ঝরে যাচ্ছে বলে জানালেন তারা।

আমচাষিদের মতে, চাষিরা আগে পুরোপুরি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল ছিল। সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার ফলে প্রায় সবাই এখন নিয়মিত আমবাগান বা গাছের পরিচর্যা করেন। তাছাড়া, যত্নের অভাবে প্রচুর পরিমাণে আম নষ্ট ও নিম্নমানের হত। কিন্তু ব্যাগিং পদ্ধতি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন ক্ষতির হাত থেকে ওইসব আম রক্ষা পাচ্ছে, তা আকারে বড় ও পুষ্ট হওয়ায় ফলনও বাড়ছে। এতে চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন বলে জানান আমচাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ঝিনাইদহ জেলা অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ২,৭৭৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ হচ্ছে। এরমধ্যে শুধু মোট চাঁদপুর উপজেলাতেই সর্বাধিক ৭১০ হেক্টরে আমচাষ হচ্ছে। উপজেলায় আমচাষের জমির পরিমাণ হলো- ঝিনাইদহে ৫৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩৬০ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৭১০ হেক্টর, মহেশপুরে ৪৮০ হেক্টর, শৈলকুপায় ৪০৫ হেক্টর এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৪০ হেক্টর। এবার জেলায় কমপক্ষে ৪৪ হাজার টন আম উৎপাদিত হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তরা। গতমৌসুমে জেলায় ৪৩,২৫৭ টন আম উৎপাদন হয় বলে সূত্র জানায়।

জেলায় আমচাষ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ঝিনাইদহ জেলার উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ জানান, তাপপ্রবাহে আমের ক্ষতি হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ব্যাপর। তবে ক্ষতি যাতে না বাড়ে সেজন্য তারা চাষি ও বাগান মালিকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

তিনি জানান, জেলার চাষিরা ধান, গম, ভুট্টা, পান ও সবজির পাশাপাশি ফল উৎপাদনেও ভূমিকা রেখে চলেছেন। তবে আমচাষ বিষয়ে অনেক কৃষকেরই এখনও পুরোপুরি ধারণার ঘাটতি রয়েছে। তারা সব কৃষককে ক্রমাগত প্রশিক্ষণের আওতায় এনে তাদের অভিজ্ঞতাকে শাণিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন।

ইতোমধ্যেই আমচাষিরা তাদের বাগানে যখন-তখন আর কীটনাশক না ছিটিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন বিধায় বিষমুক্ত পুষ্ট ফল পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে।

এতে যেমন ওই কৃষকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে, দেশে বেশি এবং উন্নতমানের ফল উৎপাদনেও তা বেশ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন উপ-পরিচালক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button