দিনাজপুর, উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম জেলা
ঝিনাইদহের চোখঃ
রংপুর বিভাগের একটি জেলা দিনাজপুর। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের সব জেলার মধ্যে বৃহত্তম জেলা এটি। সাহিত্য এবং সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে ভরপুর দিনাজপুরের ইতিহাস বেশ সুপ্রাচীন ও সমৃদ্ধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের লাখ লাখ বছরের প্রাচীন স্থানগুলোর মাটির সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এই দিনাজপুরের মাটির।
পূর্বে দিনাজপুর পুণ্ড্রবর্ধনের অংশ ছিল। দিনাজপুরের নামকরণ সম্পর্কে স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, জনৈক দিনাজ বা দিনারাজ দিনাজপুর রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। তার নাম অনুযায়ী রাজবাড়ীতে অবস্থিত মৌজার নাম দেওয়া হয় দিনাজপুর। পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসকগণ নতুন জেলা গঠন করার সময় রাজার সম্মানে জেলার নামকরণ করেন দিনাজপুর।
ইউরোপীয় এবং চীন ভ্রমণকারীদের বিবরণ থেকে পাওয়া যায়, বৃহৎ করতোয়া নদীর তীরে অজানা সময় থেকে এক উন্নত সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। করতোয়ার তীরে এটি গড়ে উঠেছিল বলে একে করতোয়া সভ্যতা হিসেবে অভিহিত করা হয়। ধারণা করা হয়, কাল পরিক্রমায় আসা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটই ছিল এই সভ্যতার প্রধান নাগরিক কেন্দ্র। ইতিহাস এর বিখ্যাত পঞ্চনগরী কিন্তু দিনাজপুরেই অবস্থিত ছিল।
দিনাজপুর জেলা পুরাকীর্তি স্থাপনার জন্য বেশ সমৃদ্ধ। এসব স্থাপনার মধ্যে গোপালগঞ্জ পঞ্চরত্ন মন্দির, কুন্দারনপুর, কান্তজির মন্দির (অনেকে কান্তজিউ মন্দির বলেন), ফুলবাড়ি দুর্গ, দিনাজপুর রাজবাড়ি, সোনাভানের ধাপ ইত্যাদি। এসকল স্থানগুলো দর্শনীয় স্থান হিসেবেও গণ্য হয়ে থাকে। এছাড়াও কিছু দর্শনীয় যায়গা আছে তা হল রামসাগর দীঘি, স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট, নয়াবাদ মসজিদ ইত্যাদি।
এছাড়া দিনাজপুর জেলা লিচুর জন্য বেশ বিখ্যাত। এখানেই দেশের সেরা লিচু উৎপাদন হয়, তার মধ্যে বম্বায়, চায়না-৩, বেদানা লিচু অন্যতম। চাল উৎপাদনেও এই জেলার ধারে এখনো কেউ ঘেঁষতে পারেনি। চিনিগুরা, বাদসা ভোগ, কালোজিরা ইত্যাদি সব ধরণের সুগন্ধি চালই এখানে হয়ে থাকে। দিনাজপুর পুরোটায় কৃষি নির্ভর।
দেশের একমাত্র কয়লা খনি ‘বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি’ এই দিনাজপুরে অবস্থিত; যা দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে।