বন-নদীর অপরূপ সৌন্দর্যের খুলনা

ঝিনাইদহের চোখঃ
বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম জেলা খুলনা। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রূপসা ও ভৈরব নদী তীরে এই জেলা অবস্থিত। বাংলাদেশের প্রাচীন নদীবন্দরগুলোর মধ্যে খুলনা একটি। এছাড়া খুলনাকে শিল্পনগরীও বলা হয়ে থাকে।
হযরত পীর খানজাহান আলীর (র.) স্মৃতি বিজড়িত শহর খুলনার ইতিহাস বেশ ঐতিহ্যপূর্ণ। খুলনা নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে অনেক মত রয়েছে। তার মধ্যে একটি- ধনবান সাওদাগরের দ্বিতীয় স্ত্রী খুল্লনার নামে নির্মাণ করা হয় ‘খুল্লনেশ্বরী কালী মন্দির’। আর এই মন্দিরের নাম থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি।
আবার জানা যায়, ১৭৬৬ সালে ‘ফলমাউথ’ জাহাজের নাবিকদের উদ্ধারকৃত এক রেকর্ডে লিখিত ‘Culnea’ শব্দ থেকে খুলনা নামটি আসে। তবে আরেকটি সূত্র থেকে জানা যায়, ইংরেজদের মানচিত্রে লিখিত ‘Jessore-Culna’ শব্দ থেকে খুলনা নামের সৃষ্টি। তবে আসল সত্য কোনটি তা এখনো জানা যায়নি।
পৃথিবীর বিখ্যাত উপকূলীয় বন ‘সুন্দরবন’ খুলনা জেলার দক্ষিণে অবস্থিত। মূলত সুন্দরবনের জন্যই খুলনার পরিচিতি সবার কাছে। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অপরূপ বনভূমি এই ‘সুন্দরবন’। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনও এটি।
সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় জায়গা করে নেয়। বনভূমিটি ‘রয়াল বেঙ্গল টাইগার’-এর জন্য বিখ্যাত হলেও আরো অনেক বিরল প্রাণির অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি রয়েছে।
খুলনা জেলায় দেখার মত অনেক জায়গা রয়েছে। তারমধ্যে খুলনা জাদুঘরটি অন্যতম। এছাড়া রয়েছে রূপসা নদীর উপরে নির্মিত খান জাহান আলি সেতু; এটি রূপসা সেতু নামেও পরিচিত। আরো রয়েছে মসজিদকুড় মসজিদ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুড়বাড়ি, লিনিয়ার পার্ক, শহিদ হাদিস পার্ক, গল্লমারি বধ্যভূমি শহীদস্মৃতি সৌধ এবং স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বাড়ি।
খুলনার বিখ্যাত খাবারের নাম চুই ঝালের গরুর মাংস অথবা চু্ই ঝালের রাজ হাঁসের মাংস; চুই এক ধরনের গাছের ছাল বা ডাল, যেটি মাংস রান্নার একটি বিশেষ মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে ঘুরতে গেলে চুই দিয়ে রান্না করা অন্তত একটি পদ খেতে ভুলবেন না যেন।